মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণে কোনো ধরণের অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজরাতুন নাঈম।
শনিবার (২২ জুন) বিকেলে তিনি বড়লেখার দশটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে এমন হুশিয়ারি বার্তা দিয়েছেন।
ইউএনও নাজরাতুন নাঈম বলেছেন, আমাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। কোনো পানিবন্দি মানুষ যেন ত্রাণ সামগ্রী থেকে বাদ না পড়ে। কেউ যেন নির্ধারিত পরিমাণ থেকে কম না পায়, সেটা সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান, ট্যাগ অফিসার, সচিব, ইউপি সদস্য নিশ্চিত করবেন। একই সাথে নির্ধারিত ছকে সকলের স্বাক্ষরিত মাস্টার রোল দাখিল করবেন। কেউ যদি ত্রাণ বিতরণে কোনোধরনের অনিয়ম করে তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বড়লেখা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ। পুকুর ভেসে বেরিয়ে গেছে মাছ। এই অবস্থায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ঘরে থাকতে না পেরে অনেকে বাধ্য হয়ে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছেন। কেউ আবার আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে উঠেছেন। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ রাস্তা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফলে মানুষজন সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন। অবশ্য বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন বাড়তি টাকা দিয়ে নৌকায় চলাচল করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৩৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে সাড়ে চারশতাধিক পরিবার উঠেছে। এসব কেন্দ্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রশাসন বন্যার্ত মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ৪৪ মে. টন চাল (ত্রাণ) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে ত্রাণ বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশে বিভিন্ন ইউনিয়নের সশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান, ট্যাগ অফিসার, সচিব, ইউপি সদস্য ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এদিকে বন্যার্ত মানুষ নির্ধারিত পরিমাণ চাল থেকে কম পাচ্ছেন-এমন অভিযোগ শুনে ইউএনও নাজরাতুন নাঈম বড়লেখার দশটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে ‘ত্রাণ বিতরণে কোনো অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা হবে’ এমন হুশিয়ারি দেন।