নুরুল হক শিপু ::
সিলেটে সিটি কর্পোরেশনের ‘খাদ্য ফান্ডে’ ৪৭ হাজার পরিবারের খাদ্য সামগ্রী জমা হয়েছে। সিলেটের ব্যবসায়ী, প্রবাসী, বিত্তবান মানুষ ও সিসিকের নিজস্ব ফান্ডের তহবিলের অর্থ থেকে দেয়া দানে এসব খাদ্য সামগ্রী জমা হয়। সব মিলিয়ে ৬৮ হাজার দরিদ্র পরিবারের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছন নগর পিতা আরিফুল হক চৌধুরী।
এর আগে গত ২৯ মার্চ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে শ্রমজীবী অসহায় মানুষের জন্য খাদ্য ফান্ড গঠনের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান মেয়র আরিফ। এরপর সোমবার ও মঙ্গলবারে এসব খাদ্য সামগ্রী ফান্ডে জমা হয়।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বস্তি আছে ১ হাজার ৯৪ টি। এরমধ্যে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫১ মানুষ বস্তিতে বসবাস করে। আর পরিবারের হিসেবে বস্তি এলাকায় বসবাস করে প্রায় ৬৮ হাজার পরিবার। এদের জন্যই মূলত এ খাদ্য ফান্ড গঠন করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
সিসিক সূত্র আরও জানায়, সরকারের কাছে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ৬৪৯ মেট্রিক টন খাদ্য সামগ্রী চাওয়া হলেও সরকার থেকে মাত্র ৫০ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা পাওয়া গেছে। তবে হয়তো এটি পর্যায়ক্রমে হয়তো আরও আসবে। তবে সিলেট সিটি কর্পোরেশন বসে নেই। সিসিকের পক্ষ থেকে নগরীর বৃত্তবানদের আহবান করা হয়েছিল । তারাও মেয়রের ডাকে সারা দিয়েছেন। তারা গত দুইদিনে ৩৫ মেট্রিক টন চাল, ১০ মেট্রিক টন ডাল, তেল ৭ হাজার লিটার, পেঁয়াজ ১০ মেট্রিক টন এবং ৩১ হাজার পিস সাবান খাদ্য ফান্ডে অনুদান দিয়েছেন। বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী প্রায় ৯৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন ব্যবসায়ী, প্রবাসী ও নগরীর বৃত্তবান মানুষেরা। এটি চলমান কার্যক্রম বিধায় আরও খাদ্য সামগ্রী ফান্ডে আসছে এবং আসবে বলেও জানানো হয়।
আর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে ১০১ মেট্রিক টন আলু, ৫৬ মেট্রিক টন ডাল, ৫৬ মেট্রিক টন পেঁয়াজ, তেল ৫৮ হাজার ৮১৯ লিটার, ২৪৫ মেট্রিক টন চাল এবং ৩৪ হাজার ৮১৯ পিস সাবান ক্রয় করা হয়েছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আমাদের ডাকে সারা দিয়ে যারাই খাদ্য ফান্ডে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কারণ দেশের এই দুর্যোগের মুহূর্তে তারা নগরবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমরা আশা করি আগামী দিনেও তারা এভাবে নগরবাসীর পাশে দাঁড়াবেন। আর আমরা বিশ্বাস করি সবার সমন্বিত সহযোগিতায় সিলেট নগরীর সবার ঘরেই খাবার পৌঁছে দিতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, আমরা আজ মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) থেকে স্থানীয় কাউন্সিলদের মাধ্যমে বিতরণ শুরু করেছি। আশাকরি আগামী দুতিনদিনের মধ্যে সবাইকে খাবার পৌঁছে দেব। আমরা যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করব এখানে আমাদের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর এবং তাদের দেয়া জনগণকে নিয়ে করা কমিটি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সাংবাদিক ও বিভিন্ন সংস্থার লোকজন উপস্থিত থাকবেন। একই সাথে ঘরের বাইরে কাউকে খাদ্যসামগ্রী দেয়া হবে না। আমাদের গাড়ি করে সবার ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেয়া হবে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা কর্মচারী সবাই নিজেদের একদিনের বেতন খাদ্য ফান্ডে দিয়েছেন উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আমি ও আমাদের কাউন্সিলররা অনেকেই সবাই আমরা নিজেদের সম্মানি ভাতা খাদ্য ফান্ডে জমা দিয়েছেন। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। আসলে এই দুর্যোগে সবারই সাধ্যমতো এগিয়ে আসতে হবে।