• ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

সকল দরজায় কড়া নাড়ছেন কাউন্সিলর আজাদ

bijoy71news
প্রকাশিত এপ্রিল ২, ২০২০

নুরুল হক শিপু ::
ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এখন ভাইরাল। ছবির এ মানুষটিকে কেউ মানবতার ফেরিওয়ালা, কেউ বলেছেন মজুর আবার কেউ কেউ স্যালুট জানিয়ে সম্মান করছেন। মানুষটি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ। আজাদ মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদকও। তবে জনপ্রতিনিধিত্ব আর রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আজাদ এখন মানুষের পাশে থেকে বুঝিয়ে দিয়েছেন-তিনি সুসময়ের পাখি নন। করোনা ভাইরাসের মহামারি রুখতে পুরো বিশ্বের মানুষ যখন ঘরবন্দি; তখনই সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন আজাদুর রহমান আজাদ। ব্যক্তি উদ্যোগে নগরীর কোনো ওয়ার্ডে প্রথম খাদ্যসামগ্রী বিরণ করেন আজাদই। তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁরই স্বজন, বন্ধু-বান্ধব আর শুভাকাঙ্ক্ষিরা। আজাদও ৩৫শ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিতে কখনো কখনো নিজের কাঁধে নিয়েছেন খাবারের বস্তা।
খাদ্যসামগ্রী বিতরণে তিনিই ব্যতিক্রম-এমনটি মন্তব্য করে ওয়ার্ডে এক মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য জানান, প্রবাসীদের টাকায় চলে তাদের পরিবার। কিন্তু এই মুহূর্তে তাদের পরিবারের সদস্য প্রবাসে গৃহবন্দী। বাসায় টাকা পাঠাতে পারেননি। চিন্তিত এ সংসারের মানুষ কারো কাছে সাহায্য চাওয়ারমতো নয়। তিনি বলেন, যে বিষয়টি ভালো লেগেছে তাহলো-কাউন্সিলর আজাদ বিবেচনা করেননি কে কতোটা বিত্তবান। তিনি প্রতিটি বাসার দরজায় কড়া নাড়ছেন। যে বলছে সহযোগিতা লাগবে মনের আনন্দে তাঁর হাতে সাহায্য তুলে দিচ্ছেন। যিনি বলছেন সহযোগিতা লাগবে না, বরং তাঁর সাথে এই মহতি কাজে অংশ নেবেন, আজাদ তাঁকেও সাধুবাদ জানাচ্ছেন। গত ৪ দিন থেকেই চলছে কাউন্সিলর আজাদের এ কার্যক্রম। প্রথমদিন থেকেই তাঁকে নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। বিশেষ করে এ আলোচনাকে আরো প্রাণ দিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। নিজেদের ফেইসবুক আইডিতে প্রশংসা করে আজাদকে নিয়ে স্ট্যাটাসগুলো তারই প্রমাণ। বিজয়৭১ নিউজ ডটকমের পাঠকদের জন্য কয়েকটি স্ট্যাটাস হুবুহু তুলে ধরা হলো।
‘সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আলম চৌধুরী লিখেছেন- ‘তাকে নিয়ে অনেকেরই গাত্রদাহ। নগরভবনের সহকর্মী বলেন আর রাজনৈতিক সহযোদ্ধা; নিন্দুকের অভাব নেই তার। জেলাসফিল থেকেই তাদের এই গা পোড়ন। কারণ কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ যা পারেন তা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়।
খেটে খাওয়া মানুষের এই দুঃসময়ে মেয়র থেকে কাউন্সিলর, কিংবা বড় বড় পদবীধারী সাবেক, বর্তমান নেতারা যখন হাত গুটিয়ে বসা তখন আজাদুর রহমান আজাদ তার ওয়ার্ডের সাড়ে তিন হাজার অসহায় মানুষের তালিকা করে খাদ্য সহায়তা নিয়ে ছুটছেন বাড়ি বাড়ি।


দূর্যোগ দুর্বিপাকে ওয়ার্ডের একটি পরিবারও না খেয়ে থাকবে না, এমন ঘোষনা দিতে হলে বুকে সাহস লাগে। মানুষকে ভালোবাসার মতো মন থাকতে হয়। যা অনেকেরই নেই। সেই না থাকাটাই তাদের অন্তর্জ্বালার অন্যতম কারণ।
এই কয়েক বছর আগেও এই মানুষটি সম্পর্কে আমারও ধারণা ছিল নেগেটিভ। এখন যতটুকু শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি, আস্থা রাখি, তখন তারচেয়ে বেশি দূরত্ব রেখে চলতাম। কিন্তু তার সামাজিক কর্মকান্ড, ক্রীড়াপ্রেম আর রাজনৈতিক কমিটমেন্ট আমাকে স্থির করেছে তার কাছাকাছি।
বাইরে থেকে চর্মচোখে দেখা এই কঠোর কঠিন মানুষটির ভেতরের কোমল মন ক’জন দেখেছে জানি না। তবে নিশ্চয় তার ওয়ার্ডের বাসিন্দারা কঠিনের আড়ালের আজাদকে চিনে নিয়েছেন। তা না হলে সিটি নির্বাচনে টানা চারবারের (সর্বশেষ বিনাপ্রতিদ্বন্দিতায়) কাউন্সিলর হওয়ার সৌভাগ্য তার হতো না।
এগিয়ে যান আজাদ ভাই, মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে। আজীবন থাকুন মানুষের কাছাকাছি, পাশাপাশি।’
সাংবাদিক এ.এইচ আরিফ লিখেছেন-‘রোহিঙ্গাদের চরম দুঃসময়ে সিলেট থেকে ট্রাক দিয়ে খাবার নিয়ে গেলেন নিজে বহন করে। সেই খাবার নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের হাতে তুলে দেন। করোনায় সিলেটসহ সারা দেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন। দিনমজুর শ্রমজীবীরা কি লকডাউন বুঝে? এই মানুষগুলো যেন ঘরে থাকে। সেজন্য আবারো নেমে পড়লেন তিনি। ৩ হাজার ৫শ পরিবারের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিবেন। নিজে কাঁধে করে সেই খাবার স্বল্প আয়ের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছেও দিচ্ছেন! ভাই আপনাকে স্যালুট জানাই।
ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় অপু লিখেছেন-একজন মানবতার ফেরিওয়ালা❤আগামীর প্রত্যেকটা দিন কাটুক মানুষের কল্যাণে।