• ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

ডার্ক চকোলেট ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়

bijoy71news
প্রকাশিত অক্টোবর ৪, ২০২৩
ডার্ক চকোলেট ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়

নীরব ঘাতক রোগ ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিরাময় করা সম্ভব নয়। তবে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায়। ডায়াবেটিস সাধারণত দুই ধরনের। টাইপ ১ ডায়াবেটিস ও টাইপ ২ ডায়াবেটিস। টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না। অন্যদিকে, টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না অথবা উৎপন্ন হলেও সঠিকভাবে কাজ করে না। কিছু প্রাকৃতিক খাবার যেমন ডার্ক চকোলেটের উপাদানের মাধ্যমে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

সুস্থ থাকতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সেরা উপকরণ ডার্ক চকোলেট। শুধু তা-ই নয়, ওজন ঝরাতেও কার্যকর ডার্কচকোলেট। তাই প্রতি দিন ডার্ক চকোলেট খেলে শরীরে ক্ষতি হয়, এমন ধারণা ভুল। তবে মিল্ক চকোলেট নয়, স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখতে হলে ভরসা রাখুন ডার্ক চকোলেটের উপর। জেনে নিন ডার্ক চকোলেট শরীরের কী কী উপকার করে?

সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, ডায়াবেটিস মানেই চকোলেট খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে, তার কোনও মানে নেই। ডায়াবেটিকরা অনায়াসে ডার্ক চকোলেট খেতে পারেন। বরং ডার্ক চকোলেটে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিস রোগের ঝুঁকি এড়াতে নিয়ম করে ডার্ক চকোলেট খাওয়া যেতেই পারে।

গবেষণা বলছে সকালে উঠে অল্প পরিমাণে ডার্ক বা কনসেনট্রেটেড চকলেট খেতেই পারেন। তাতে রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। ক্ষুধাও কম পাবে। ডার্ক চকলেটের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। ডার্ক চকলেটে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য উপকারী উপাদান, শরীরে প্রবেশ করা মাত্র টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ডার্ক চকোলেট খেলে ডায়াবেটিস ও ক্যানসার দূরে থাকে।

ডার্ক চকোলেটের গুণ কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এই চকোলেটের উপকারিতার শেষ নেই। শরীরের যত্নে বিভিন্ন ভাবে উপকার করে ডার্ক চকোলেট।

ডার্ক চকোলেট শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, ফলে ডায়াবেটিসের মতো রোগ ঠেকিয়ে রাখতে ডার্ক চকোলেট খাওয়াই যায়।

চকোলেটের মধ্যে থাকে কোকো, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। কোকোতে থাকে ভরপুর মাত্রায় ফ্ল্যাভনয়েড, যা মস্তিষ্কে রক্তের সঞ্চালনা বাড়িয়ে দেয়। ডার্ক চকোলেট খেলে চিন্তাশক্তি ও কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়। দীর্ঘ দিন স্মৃতিশক্তি অটুট রাখতেও চকোলেট দারুণ উপকারী। গবেষণা বলছে, যে সব মহিলা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ডার্ক চকোলেট খান, তারা স্ট্রেস মুক্ত থাকেন এবং বুদ্ধিদীপ্ত, হাসিখুশি সন্তানের জন্ম দেন।

ডার্ক চকোলেট হৃদ্‌যন্ত্রকে সুস্থ রাখতেও উপকারী। প্রতি দিন দু-তিন টুকরো চকোলেট খেলে তা হৃদ্‌যন্ত্রের জন্য খুব ভাল। উচ্চ রক্তচাপের রোগীরাও ডার্ক চকলেট খেতে পারেন। এই চকোলেটে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায়, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

বার্ধক্যের প্রভাব কমানোর ক্ষেত্রেও ডার্ক চকোলেটের বিশেষ গুণ রয়েছে। এটি অ্যান্টি-এজিং এজেন্ট হিসাবে কাজ করে। তাই যাঁরা শরীরে বয়সের ছাপ ঠেকিয়ে রাখতে চান, তাঁরা ডার্ক চকোলেট খেতে পারেন।

ডার্ক চকোলেট খেলে মিষ্টি, নোনতা, ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক টুকরো ডার্ক চকোলেট ‌খেয়ে ফেলতে পারেন। এতে ওজন থাকবে নিয়ন্ত্রণে আর মিষ্টি খাওয়ার সাধও পূরণ হবে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে গেলে যে শরীর নিয়ে আর কোনও চিন্তাই থাকে না, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ডার্ক চকলেটে দুধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। একটা হল ফ্লেবোনয়েড এবং দ্বিতীয়টি হল পলিফেনলস, যা নানাভাবে শরীরের গঠনে সাহায্য করে থাকে।

ডার্ক চকোলেটের মধ্যে থাকে কোকো, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। কোকোর মধ্যে থাকে ভরপুর মাত্রায় ফ্ল্যাভনয়েড, যা মস্তিষ্কে রক্তের সঞ্চালনা বাড়িয়ে দেয়। শরীর-মন চনমনে হয়ে ওঠে, যার ফলে চিন্তাশক্তি ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। অনেকে আবার মনে করেন, দীর্ঘ দিন স্মৃতিশক্তি অটুট রাখতেও এই চকোলেট দারুণ উপকারী। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সব মহিলা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বেশি ডার্ক চকোলেট খান তারা মানসিক চাপ মুক্ত থাকেন।

বার্ধক্যের প্রভাব কমাতেও ডার্ক চকলেটের বিশেষ গুণ রয়েছে। তাই যারা অকালবার্ধক্য ঠেকাতে চান, তারা অবশ্যই ডার্ক চকলেট খেতে পারেন। এটি অ্যান্টি-এজিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। ডার্ক চকোলেটে যে বায়োঅ্যাক্টিভ পদার্থ থাকে তা ত্বকের পক্ষে উপকারী হতে পারে। ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে ত্বক উজ্জ্বল দেখাতে সাহায্য করে ডার্ক চকোলেট।

স্পেনের মুরশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্রিংহ্যামের গবেষকেরা যৌথভাবে এই গবেষণা চালান। কয়েকজন ঋতুবন্ধ মহিলাদের সকালেবেলা চকলেট খাওয়ানো হতো এই গবেষণায়। তাদের শরীরে এর কী ধরনের প্রভাব পড়ছে, তা বোঝার চেষ্ট চালানো হয়েছিল।

এফএএসইবি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে চকলেট খাওয়ায় কোনও রকম ওজনের হেরফের হয়নি তাদের। বরং দেখা গিয়েছে, ঘুম, ক্ষুধা, খাওয়ার ইচ্ছায় প্রভাব পড়েছে চকলেট খাওয়ায়।

নিয়মিত ডার্ক চকলেট খাওয়া শুরু করে শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা এতটা বৃদ্ধি পায় যে দেহে ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের খোঁজ পাওয়া মুশকিল হয়ে পরে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যানসার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি আরও সব জটিল রোগও ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।

ডার্ক চকোলেট খেলে ধমনীতে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি হয়। যার ফলে মস্তিষ্ক ধমনীকে খানিক বিশ্রাম নেওয়ার বার্তা পাঠায়। তাই রক্ত চলাচল সহজ হয় এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।