• ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে ইফতারী প্রথা বন্ধের অনুরোধ ব্যারিস্টার সুমনের

bijoy71news
প্রকাশিত মার্চ ১৯, ২০২৪
সিলেটে ইফতারী প্রথা বন্ধের অনুরোধ ব্যারিস্টার সুমনের

বৃহত্তর সিলেটে প্রচলিত মেয়ের বাড়িতে ইফতার দেওয়ার রেওয়াজ বন্ধের অনুরোধ করেছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এমপি। তিনি আমেরিকা থেকে ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, মেয়ের বাড়িতে ইফতারি দেওয়ার সামর্থ্য অনেকের নাই। তাদের অনেকে সুদে টাকা ধার নিয়ে মেয়ের বাড়িতে ইফতার দেন। অনেকেই সামাজিকতা রক্ষার্থে কষ্ট করে মেয়ের বাড়িতে ইফতার দেন। এটা অত্যন্ত লজ্জার। খোঁজ নিয়ে দেখবেন যিনি দেন তিনি লজ্জায় কিছু বলতে না পারলেও তার কষ্ট হয়। তাই সবাইকে এই কুসংস্কার পরিহার করার আহবান জানান।

তিনি চুনারুঘাট মাধবপুরবাসীর প্রতি বিশেষ অনুরোধ করেছেন মেয়ের বাড়িতে ইফতার না দেওয়া এবং শ্বশুরবাড়ি থেকে ইফতার না আনতে অনুরোধ করেছেন বিবাহিত পুরুষদের।

ব্যারিস্টার সুমন ফেসবুক লাইভে বলেন, আমার বিয়ের পরও দুবার আমার শ্বশুরবাড়ি থেকে ইফতার এসেছে; কিন্তু যখন দেখলাম বাবার কাছ থেকে ইফতার না পেয়ে মেয়ে আত্মহত্যা করেছে, তারপর থেকে আমি ইফতার বন্ধ করে দিয়েছি। তিনি সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হওয়া এবং অন্যদের সচেতন করার আহবান জানান।

এর আগে ২০২৩ সালের রমজান মাসে উপজেলার নরপতি গ্রামে জনৈক দরিদ্র পরিবারের এক গৃহবধূ তার মেয়ের বাড়িতে রমজানের প্রথম দিনে ইফতার দিতে একজনের কাছ থেকে প্রতি মাসে ১৫০ টাকা সুদ প্রদানের চুক্তিতে এক হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। এ টাকা দিয়ে তিনি মেয়ের বাড়িতে ইফতারি পাঠান। এ খবর পেয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন যান তার বাড়ি নরপতি গ্রামে।

ওই গৃহবধূকে নিয়ে তিনি লাইভে এসে বলেছিলেন, তার নিজের এলাকায় একটি দরিদ্র পরিবার মেয়ের বাড়ি ইফতারি দিতে ১৫০ টাকা সুদে এক হাজার টাকার ধার নেন। এ সময় গৃহবধূ জানায়, অভাবের সংসার, কাজ কাম করে খাই, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাই, টাকা নাই, ইফতারি দিতে তার কষ্ট হয়। ইফতারি না দিলে মেয়ের বাড়ি ও আশপাশের লোকজন লজ্জা দেবে, সমাজ রক্ষার কারণে বাধ্য হয়ে সুদে টাকা দিয়ে মেয়ের বাড়ি ইফতারি দিয়েছেন। তিনি প্রতি বছরই এভাবে ইফতারি দেন বলেও লাইভে জানিয়েছিলেন।

সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কাউছার বাহার বলেন, আমি চেয়ারম্যান থাকার সময় নিজের চোখে দেখেছি এবং কয়েকটি সালিশ করেছি, বাপের বাড়ি থেকে মেয়ের বাড়ি ইফতারি না গেলে মেয়ে আত্মহত্যা করে না হয় ছাড়াছাড়ি হয়। আমাদের সমাজের এ ধরনের কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। এছাড়া একই এলাকায় একটি পরিবার ৫ হাজার টাকার ছাগল ২ হাজার টাকায় বিক্রি করে মেয়ের বাড়ি ইফতারি দিয়েছেন।