ব্যাংক খাতে সুশাসনের অভাবে এতো দিন যারা দুর্নীতি ও জাল-জালিয়াতের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দেবেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। একই সঙ্গে তিনি ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, গ্রাহকদের আস্থা অর্জন, সেবার মান বাড়ানো, ঋণ আদায় বৃদ্ধি, খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেবেন।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম ব্যাংকার্স সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ওই সভায় তিনি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) উদ্দেশ্যে এসব বার্তা দিতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। পাশাপাশি ব্যাংক খাতে নতুন করে যাতে আর কোনো জাল জালিয়াতি না হয়, কোনো অন্যায় সুবিধা যাতে কোনো গ্রাহককে না দেওয়া হয় সে বিষয়েও বার্তা দেবেন তিনি।
বৈঠকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এমডিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তারাও বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।
সূত্র জানায়, ব্যাংকারর্স সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূলত ব্যাংক খাতের নতুন কোনো নীতি বা বিষয় থাকলে বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বার্তা দেওয়ার থাকলে ওই বৈঠকের মাধ্যমে দেওয়া হয়। আগে এ সভা প্রতি মাসে অনুষ্ঠিত হলেও গত কয়েক বছর ধরেই এটি নিয়মিত হচ্ছে না।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এরপর সাবেক গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার পদত্যাগ করলে গত ১৪ আগস্ট নতুন গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব নেন বিশষ্টি অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি দায়িত্ব নিয়ে ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দখলদারকে উচ্ছেদ করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দখল করা ৭টি ব্যাংকের পর্ষদ ইতোমধ্যে বাতিল করে নতুন পর্ষদ পুনর্গঠন করে দিয়েছেন। মূল্যস্ফীতির হার কমাতে মুদ্রানীতিকে আরও সংকোচনমুখী করেছেন। ডলারের প্রবাহ বাড়াতে এর দাম বাড়ানোর পাশাপাশি টাকা পাচার বন্ধে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। গত সরকারের আমলে সংগঠিত জাল জালিয়াতির গুলোর তদন্ত শুরু করেছেন।
এসব প্রেক্ষাপটে ব্যাংকার্স সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যে কারণে ব্যাংকারদের বেশ আগ্রহ রয়েছে এই সভার প্রতি। নতুন গভর্নর ব্যাংক খাতের সার্বিক অবস্থা স্থিতিশীল করতে গভর্নর কি নির্দেশনা দেন।