• ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

দেশ বিক্রির কথা যারা বলে, তারা পাকিস্তানের দালাল: প্রধানমন্ত্রী

bijoy71news
প্রকাশিত জুন ২৫, ২০২৪
দেশ বিক্রির কথা যারা বলে, তারা পাকিস্তানের দালাল: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা এই দেশকে বিক্রি করে না। কারণ, আমরা এই দেশকে স্বাধীন করেছি। এতে যে কষ্টটা ভোগ করেছি, সেটা আমরা জানি। যারা দেশ বিক্রির কথা বলে, তারা পাকিস্তানের দালালি করেছে।’

মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে ভারত সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতের রেল সংযোগ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার বিষয়টি তুলে ধরে প্রশ্ন রাখেন এক সাংবাদিক। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের কাছে বাংলাদেশ বিক্রি হয় কীভাবে সেই প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা বলে ভারতের কাছে বাংলাদেশ বিক্রি হয়ে যাবে, আমার প্রশ্ন বিক্রিটা হয় কীভাবে? আসলে যারা একথা বলে তারা নিজেরাই ভারতের কাছে বিক্রি হওয়া।’

তিস্তা মহাপরিকল্পনায় ভারতের সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছেন বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ভারতের সহযোগিতায় বাংলাদেশে তিস্তা প্রকল্প করবো। সেই বিষয়ে নয়াদিল্লি আমাদের আশ্বাস দিয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় একটি মিত্র দেশ, আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিজেদের রক্ত ঢেলে দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। ভারত মিত্রশক্তি হিসেবে আমাদের পাশে থেকে যুদ্ধ করেছে।’

‘পৃথিবীর যেসব দেশে যুদ্ধে মিত্রশক্তি সহায়তা করেছে, তারা কিন্তু সেই দেশ থেকে ফেরত যায়নি। এখানে ভারত কিন্তু ব্যতিক্রম। যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছেন যে তারা দেশে ফিরে যাক, ভারতের প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে তাদের ফেরত নিয়ে গেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরপরও যারা কথা বলে, ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে যাবে তারা একথা বলে কীভাবে? আসলে যারা একথা বলে তারা নিজেই ভারতের কাছে বিক্রি করা। কারণ, আমরা দেখেছি যখনই মিলিটারি ডিক্টেটররা (সামরিক স্বৈরাচার) এসেছে জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ওপর দিয়ে ভারতবিরোধী কথা বলেছে, আর ভারতের পা ধরে বসে থেকেছে। এগুলো আমার নিজের দেখা, জানা।’

একটা দেশের মধ্যে অন্য দেশের ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কী প্রশ্ন রাখেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘রেল যেগুলো বন্ধ ছিল (ভারতের সঙ্গে) সেগুলো আস্তে আস্তে খুলে দিচ্ছি। অর্থনীতিতে এটা বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছে।’

‘আমরা বাংলাদেশে কী চারদিকে দরজা বন্ধ করে থাকব? ইউরোপের দিকে তাকান সেখানে কোনো বর্ডার নেই। সেখানে কী এক দেশ আরেক দেশ বিক্রি করে দিচ্ছে?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ। সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা খুলে দিলাম। এর উপকার পাবে সাধারণ মানুষ। ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হবে।’

প্রশ্নোত্তর পর্বের আগে সংবাদ সম্মেলনে ভারতে দুদিনের সফর নিয়ে একটি লিখিত বিবৃতি দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘এ সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আছেন। বরাবরের মতোই রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে গত শুক্রবার নয়াদিল্লি যান শেখ হাসিনা, দেশে ফেরেন শনিবার। প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরে দুদেশের মধ্যে ১০টি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। এর মধ্যে সাতটি নতুন এবং তিনটি নবায়ন করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে একটি লিখিত বিবৃতি ছাড়াও প্রশ্ন করার সুযোগ পান গণমাধ্যমকর্মীরা। এতে সফরের বাইরেও সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক বিষয়গুলোও উঠে আসে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী সবশেষ গত ২ মে তার থাইল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন।