• ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

লিটন-মোসাদ্দেকদের ‘তরুণ’ বলতে বাধছে মাশরাফির

bijoy71news
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৮

বাংলাদেশ দলে আমরা যাঁদের তরুণ খেলোয়াড় বলি, তাঁরা এখন আর তরুণ নেই মনে করিয়ে দিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। এশিয়া কাপে তাঁদের ভালো পারফরম্যান্সের আশা করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক
বাংলাদেশের বর্তমান দলটির জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের কন্ডিশন প্রায় অচেনা। দল হিসেবে ১৯৯৫ সালের পর সে দেশে আর খেলা হয়নি বাংলাদেশের। পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) বদৌলতে দলের দু-তিনজন সিনিয়রের খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও বেশির ভাগ ক্রিকেটারের জন্যই ‘আমিরাত’ নতুন অভিজ্ঞতা। আর দীর্ঘ ২৩ বছর পর এবার এশিয়া কাপ ফিরছে সেখানকার মাটিতে। আমিরাতের উইকেট আর কন্ডিশন নিয়ে তাই দলের ভাবনা থাকাই স্বাভাবিক। মাশরাফি বিন মুর্তজা কিন্তু বুঝিয়ে দিলেন, ভাবনাটা আসলে দুশ্চিন্তা নয়, দায়িত্ব প্রমাণের চ্যালেঞ্জ।

সেই দায়িত্ব অবশ্যই দলের সবাইকে প্রমাণ করতে হবে। চাপটা শুধু সিনিয়রদের ছেড়ে দিলে হবে না। তরুণদেরও শক্ত হাতে হাল ধরতে হবে দলের। একটু ভুল হলো। আর ভুলটা ধরিয়ে দিলেন স্বয়ং বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। সংবাদ সম্মেলনে আমিরাতের কন্ডিশন ব্যাখ্যার এক ফাঁকে মাশরাফি যেন নিজেই বোঝালেন নিজেকে, ‘আমাদের যারা তরুণ প্লেয়ার, আসলে তারা এখন আর তরুণ প্লেয়ার নয়।’

বাংলাদেশ দল বহুদিন ধরেই ‘ফ্যাব ফাইভ’-এর ওপর নির্ভরশীল। ‘ফ্যাব ফাইভ’ বলতে তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজ এই নির্ভরশীলতার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ। রানে তামিমের ধারেকাছেও কেউ ছিলেন না। সেই সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে শীর্ষ পাঁচ রান সংগ্রাহকই ‘ফ্যাব ফাইভ’।

আর বোলিংয়ে সর্বোচ্চ উইকেট ছিল মাশরাফির। শীর্ষে থাকা তিন বোলারের দুজনই পোড় খাওয়া—মাশরাফি ও রুবেল। কথিত ‘তরুণ’দের মধ্যে ছিলেন শুধু মোস্তাফিজুর রহমান। তবে বহুদিন ধরেই এই তরুণেরা খেলে যাচ্ছেন তাঁদের মতো করেই। সেই সিরিজে ব্যাট হাতে আমাদের ‘ত্রি-তরুণ’ সাব্বির রহমান (২৭), মোসাদ্দেক হোসেন (১৪) ও এনামুল (৩৩) ব্যর্থ।

এশিয়া কাপের টুর্নামেন্টও হবে ওয়ানডে সংস্করণে। সাব্বির ও এনামুল জায়গা হারালেও আছেন মোসাদ্দেক। সঙ্গে মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাস, মোসাদ্দেকদের মতো ‘অভিজ্ঞ’ তরুণ। অভিজ্ঞ কথাটা বলতে হচ্ছে মাশরাফির উক্তির পরিপ্রেক্ষিতে। যাঁদের আমরা ‘তরুণ’ তকমা দিচ্ছি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁরা কি সত্যিই তরুণ? মাশরাফির আপত্তিটা এখানেই, ‘তিন, চার, পাঁচ বছর ধরে খেলছে অনেকে, তাঁদের আপনারা তরুণ প্লেয়ার বলছেন? তিন বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পরও তাঁদের তরুণ প্লেয়ার বলতে একটু বাধা লাগা উচিত।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মিঠুনের অভিজ্ঞতা চার বছরের। লিটনের তিন বছর ও মোসাদ্দেকের দুই বছর। সিনিয়রদের সঙ্গে এই কথিত ‘তরুণ’দেরও যে পারফর্ম করতে হবে, কথাটা মনে করিয়ে দিয়ে মাশরাফি আস্থাও রাখলেন, ‘আমার বিশ্বাস যে তারাও পারফর্ম করবে।’

তবে কন্ডিশন ও মাঠ নিয়ে ভাবার চেয়ে নিজেদের সামর্থ্যে বিশ্বাস রাখছেন অধিনায়ক, ‘অস্ট্রেলিয়ায় যখন ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলি, তার আগে কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আমাদের স্মৃতি খুব ভালো ছিল না। যদি মাঠ বা আউটফিল্ড আমাদের পক্ষে না থাকে, তাহলে পারফর্ম করতে পারব না, সেই বিশ্বাস নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। আমাদের মনে হয়, আমাদের সামর্থ্য আছে, তার সঙ্গে রিয়াদ, সাকিব, মুশফিকও খেলেছিল সেখানে।’

এশিয়া কাপে নির্দিষ্ট কোনো দলকে হুমকি বলে মনে করছেন না মাশরাফি। তাঁর মতে, ‘আমাদের জন্য সবাই হুমকি।’ তবে প্রথম ম্যাচ জেতা যে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, সে কথাও মনে করিয়ে দিলেন তিনি, ‘পরিস্থিতি অবশ্যই কঠিন হবে। সেখানে আমরা দল হিসেবে খেলিনি, এটাও একটা পয়েন্ট। অনেক ভালো–খারাপের মধ্যে দিয়েও আমরা সফল হয়েছি। এগুলো আমার কাছে খুব বড় ইস্যু মনে হয় না। ইস্যু হচ্ছে, আমরা শুরুটা কেমন করছি, আমরা শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কেমন খেলছি। আমার কাছে মনে হয় ১৫ তারিখটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

১৫ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়ে এশিয়া কাপ অভিযান শুরু করবে বাংলাদেশ।

অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকেই শান্তর সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের লিড ২০৫ সিলেট টেস্টে নিউজিল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের হয়ে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, যা বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম। তার সেঞ্চুরিতে ৩ উইকেটে ২১২ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। টাইগারদের লিড ২০৫ রানের। সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিনটি পুরোটাই নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের শুরুতে দ্রুত কিউইদের শেষ উইকেট তুলে নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে ২৬ রানে ২ উইকেট হারালেও শান্ত ও মুমিনুলের ৯০ রানে ভর করে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। মুমিনুল ৪০ রানে ফিরে গেলেও শান্ত তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি। ৬৮ ওভারে ২১২ রান তোলার পর আলো স্বল্পতার কারণে তৃতীয় দিনের খেলা সমাপ্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। তৃতীয় দিন শেষে কিউইদের বিপক্ষে বাংলাদেশের লিড দাঁড়িয়েছে ২০৫ রান। সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিনে কিউইদের শেষ দুই উইকেট তু্লে নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ।ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুই টাইগার ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। ১০ ওভারে রান করেন ১৯। যার মধ্যে টাইগারদের লিড দাঁড়ায় ১২। ১২ রান লিড নিয়ে লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু লাঞ্চ থেকে ফিরেই ঘটে ছন্দপতন।দলীয় ২৩ রানে এজাজ পাটেলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান জাকির হাসান। আউট হওয়ার আগে করেন ৩০ বলে ১৭ রান। জাকির হাসানের পথ ধরে ফিরে যান মাহমুদুল হাসান জয়। আগের ম্যাচে ১৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা জয় আজ দুর্ভাগ্যজনক রানআউটের শিকার। সাউদির বলে ড্রাইভ খেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত, বল বোলারের হাত স্পর্শ করে ভেঙে যায় ননস্ট্রাইকের স্টাম্প। ফলে ৪৬ বলে ৮ রান করে রান আউট কাটা পড়েছেন জয়।তার বিদায়ে ২৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ২৬ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন মুমিনুল ও শান্ত। আগের ম্যাচে তাড়াহুড়ো করে খেলতে থাকা শান্ত আজ শুরু থেকেই খেলতে থাকেন দেখেশুনে। এই জুটিতে ভর করে ৩১ ওভারে দলীয় শতক পূর্ণ করে টাইগাররা। তার লিড ১০০ ছাড়ায় ৩৫ ওভারে।৩৮ ওভারে ১১১ রান করে ১০৪ রানের লিড নিয়ে চা পানের বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফিরে কিউইদের বিপক্ষে অর্ধশতক তুলে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত।প্রথম ইনিংসে ৩৭ রানে সাজঘরে ফিরে যাওয়ার পর আজ দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৫ বলে তুলে নেন ৫০ রান। শান্তর পথ ধরে মুমিনুল হকও এগিয়ে যাচ্ছিলেন অর্ধশতকের দিকে। কিন্তু রান আউটের শিকার হয়ে ৬৮ বলে ৪০ রান করে ফিরে যান সাজঘরে। তার বিদায়ে ১১৬ রানে ৩ উইকেট হারায় টাইগাররা। মুমিনুলের বিদায়ের পর মুশফিকের সঙ্গে জুটি গড়েন শান্ত। প্রথম ইনিংসে ১২ রানে সাজঘরে ফিরে যাওয়া মুশি আজ শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন। এই জুটিতে ভর করে ৫৬ ওভারে লিড ১৫০ পূর্ণ করে বাংলাদেশ। কিউইদের বিপক্ষে ৯৫ বলে অর্ধশতক তুলে নেওযার পর ১৯২ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি।যার মধ্যে রয়েছে ৯ টি চারের মার। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকেই সেঞ্চুরি করলেন শান্ত। যা বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম। ৬৮ ওভারে তিনি উইকেট হারিয়ে ২১২ রান করার পর আলো স্বল্পতার কারণে তৃতীয় দিনের খেলা সমাপ্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। তৃতীয় দিন শেষে কিউইদের বিপক্ষে বাংলাদেশের লিড দাঁড়িয়েছে ২০৫ রান।