সিলেট টেস্টের চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসেছে বাংলাদেশ। যার ফলে বড় লিড পাওয়ার আশা যেন ধীরে ধীরে ক্ষীণ হচ্ছে টাইগারদের। প্রথম সেশন শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩০৮ রান তুলে লাঞ্চ বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে টাইগারদের লিড দাঁড়িয়েছে ৩০১ রান।
সিলেট টেস্টের চতুর্থ দিনের শুরুতেই সাজঘরে ফিরে গেছেন অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। আগের দিনের করা ১০৪ রানের সঙ্গে আজ তিনি মাত্র ১ রান যোগ করেই ফিরে গেছেন সাজঘরে। শান্ত ফিরে গেলেও ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন মুশফিক। তবে এরপর তিনিও নিজের ইনিংসকে বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি। ফিরে গেছেন ৬৭ রান করেই।
চতুর্থ দিনের প্রথম ওভারে মাত্র ১ রান নেন শান্ত। এর পরের ওভারেই টিম সাউদির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান শান্ত। তার বিদায়ে দিনের শুরুতেই উইকেট হারালো টাইগাররা।
শান্তর বিদায়ের পর শাহাদাত হোসেন দীপুকে নিয়ে জুটি গড়েন মুশফিক। ইতোমধ্যে কিউইদের বিপক্ষে তিনি তুলে নিয়েছেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। কিউইদের বিপক্ষে আজ তিনি ৭৯ বলে তুলে নেন ৫০ রান। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তার ২৭ তম অর্ধশতক।
তবে এই জুটিও বেশিদূর এগোতে পারেনি। দলীয় ২৪৮ রানে দীপুর বিদায়ে ভেঙে যায় এই জুটি। ১৯ বলে ১৮ রান করে ইস সোধির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান দীপু।
শাহাদাত হোসেন দীপুর পর ফিরে যান মুশফিকও। সেঞ্চুরির আশা জাগানো মুশফিক এজাজ প্যাটেলের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। আউট হওয়ার আগে করেন ১১৬ বলে ৬৭ রান।
মুশফিকের বিদায়ের পর জুটি গড়েন মেহেদেী হাসনি মিরাজ ও নুরুল হাসান সোহান। তবে এই জুটিও বেশিদূর এগোতে পারেনি। ২৭ বলে ১০ রান করে গ্লেন ফিলিপসের শিকার হয়ে সোহান সাজঘরে ফিরে গেলে ভেঙে যায় এই জুটি।
সোহানের বিদায়ের পর নাঈম হাসানকে নিয়ে জুটি গড়েন মিরাজ। এই জুটিতে ভর করে লিড ৩০০ পার করে লাঞ্চ বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ। ৯৪ ওভারে ৩০৮ রান করে লাঞ্চ বিরতিতে যায় টাইগাররা। এরমধ্যে বাংলাদেশের লিড পার হয়েছে ৩০০।
এর আগে সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিনে কিউইদের শেষ দুই উইকেট তু্লে নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ।ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুই টাইগার ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। ১০ ওভারে রান করেন ১৯। যার মধ্যে টাইগারদের লিড দাঁড়ায় ১২। ১২ রান লিড নিয়ে লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ।
কিন্তু লাঞ্চ থেকে ফিরেই ঘটে ছন্দপতন।দলীয় ২৩ রানে এজাজ পাটেলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান জাকির হাসান। আউট হওয়ার আগে করেন ৩০ বলে ১৭ রান।
জাকির হাসানের পথ ধরে ফিরে যান মাহমুদুল হাসান জয়। আগের ম্যাচে ১৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা জয় আজ দুর্ভাগ্যজনক রানআউটের শিকার। সাউদির বলে ড্রাইভ খেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত, বল বোলারের হাত স্পর্শ করে ভেঙে যায় ননস্ট্রাইকের স্টাম্প। ফলে ৪৬ বলে ৮ রান করে রান আউট কাটা পড়েছেন জয়।তার বিদায়ে ২৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
২৬ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন মুমিনুল ও শান্ত। আগের ম্যাচে তাড়াহুড়ো করে খেলতে থাকা শান্ত আজ শুরু থেকেই খেলতে থাকেন দেখেশুনে।
এই জুটিতে ভর করে ৩১ ওভারে দলীয় শতক পূর্ণ করে টাইগাররা। তার লিড ১০০ ছাড়ায় ৩৫ ওভারে।৩৮ ওভারে ১১১ রান করে ১০৪ রানের লিড নিয়ে চা পানের বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতি থেকে ফিরে কিউইদের বিপক্ষে অর্ধশতক তুলে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত।প্রথম ইনিংসে ৩৭ রানে সাজঘরে ফিরে যাওয়ার পর আজ দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৫ বলে তুলে নেন ৫০ রান।
শান্তর পথ ধরে মুমিনুল হকও এগিয়ে যাচ্ছিলেন অর্ধশতকের দিকে। কিন্তু রান আউটের শিকার হয়ে ৬৮ বলে ৪০ রান করে ফিরে যান সাজঘরে। তার বিদায়ে ১১৬ রানে ৩ উইকেট হারায় টাইগাররা।
মুমিনুলের বিদায়ের পর মুশফিকের সঙ্গে জুটি গড়েন শান্ত। প্রথম ইনিংসে ১২ রানে সাজঘরে ফিরে যাওয়া মুশি আজ শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন। এই জুটিতে ভর করে ৫৬ ওভারে লিড ১৫০ পূর্ণ করে বাংলাদেশ।
কিউইদের বিপক্ষে ৯৫ বলে অর্ধশতক তুলে নেওযার পর ১৯২ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি।যার মধ্যে রয়েছে ৯ টি চারের মার। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকেই সেঞ্চুরি করলেন শান্ত। যা বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম।
৬৮ ওভারে তিনি উইকেট হারিয়ে ২১২ রান করার পর আলো স্বল্পতার কারণে তৃতীয় দিনের খেলা সমাপ্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। তৃতীয় দিন শেষে কিউইদের বিপক্ষে বাংলাদেশের লিড দাঁড়ায় ২০৫ রান।