বি৭১নি ডেস্ক
পরিকল্পিত নীলনকশার মাধ্যমে সরকার দলীর প্রার্থীদের বিজয়ী করতে চাইছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। আজ সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী অভিযোগ করেন, ‘ভয়ংকর গোপন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা প্রশাসক তথা রিটার্নিং অফিসাররা। পরিকল্পিত নীলনকশার মাধ্যমে অবৈধ সরকারের দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য লোক দেখানো নির্বাচন আয়োজনে ফন্দি-ফিকির করছে। ক্ষমতাসীনদের মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রহসনমূলক নির্বাচনী ছক তৈরি করে এগিয়ে চলছে।’
সরকার ভরাডুবির আশঙ্কায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি গ্রেপ্তার নির্যাতন এখনও চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। আজ থেকে প্রচারণা শুরু হলেও এখনও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি এমন মন্তব্য করেছেন রিজভী।
আওয়ামী লীগ নিশ্চিত ভরাডুবির আশঙ্কায় অস্থির ও বেসামাল হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘তারা বিএনপি’র বিরুদ্ধে অনর্গল মিথ্যাচার ও প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। মিডিয়া সন্ত্রাসে নেমেছে। প্রতিবেশী একটি দেশকে নিজেদের পক্ষে টানতে, অনুকম্পা ও সমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আমাদের নেতাদের নামে আজগুবি ভিত্তিহীন কথা ছড়াচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিদিন জেলা প্রশাসকরা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করছেন। ভোট ডাকাতি প্রস্তুতির শলাপরামর্শ করছেন। নির্বাচনে জাল-যোচ্চুরির সব প্রস্তুতি পাকা করছেন। আমরা বিশ্বস্তসূত্রে জানতে পেরেছি, গতকাল রোববার সকল জেলার প্রশাসকরা স্ব স্ব এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ডেকে বৈঠক করেছেন।’
এ সময় তিনি দাবি করেন, ‘সাজানো প্রশাসন ও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। জনপ্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং দলবাজ কর্মকর্তাদের নির্বাচনী মাঠ থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। এই অবৈধ সরকারকে কোন সহযোগিতা করবেন না। আপনারা এদেশের সন্তান। নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করুন।’
পাকিস্তানি দূতাবাসে বিএনপি কর্মকর্তাদের নিয়ে গতকাল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমানের মন্তব্যে রিজভী বলেন, ‘পাকিস্তানি দূতাবাসে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাক্ষাৎ ও গোপন বৈঠক করেছেন। এই অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানিয়ে পাকিস্তান হাইকমিশন গতকাল সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছে। লিখিত বার্তায় তারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছে তা ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছে। পাকিস্তানের কোনো কূটনীতিকের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক হয়নি।’
রিজভী বলেন, ‘মিথ্যা কুৎসা প্রচারণায় বিকারগ্রস্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। গোষ্ঠী স্বার্থে দেন-দরবার করার ঐতিহ্যই হচ্ছে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী সাহেবই তো ৭ দিন পাকিস্তানে কাটিয়ে আসলেন। এই ধরনের মিথ্যাচার থেকে আওয়ামী লীগ ও তাদের অর্থপুষ্ট দালাল মিডিয়া বিরত থাকবে বলে আমরা আশা করি।’
বিটিভি (বাংলাদেশ টেলিভিশন) সরকারি সম্পদ নয় বলে মন্তব্য করেছেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘এটা এখন আওয়ামী লীগের সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে।’
রিজভী আরও বলেন, ‘অতি আওয়ামী লীগ হওয়ার কারণে অতিরিক্ত সচিব বর্তমানে বিটিভি’র মহাপরিচালক পদে আসীন আছেন হারুন অর রশিদ, যুগ্ম সচিব সুরথ কুমার সরকার ডিরেক্টর অব নিউজ পদে অধিষ্ঠিত আছেন, কিন্তু পদটি উপ-সচিবের ; যুগ্ম সচিব সাখাওয়াত হোসেন পরিচালক প্রশাসন পদে আসীন আছেন, এই পদটিও উপ-সচিবের। অত্যন্ত একনিষ্ঠ আওয়ামী লীগার নুর আনোয়ার হোসেন এবং মাহবুবা ফেরদৌস প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ পদে আসীন আছেন। এরা বিটিভি’র বর্তমান পদে আসীন থাকলে ভোটের ফলাফল পাল্টে দিয়ে একটা বড় মাপের মিডিয়া ক্যু ঘটাতে সক্ষম।’
এ সময় তিনি অবিলম্বে বিটিভির উল্লেখিত কর্মকর্তাবৃন্দকে ঢাকা কেন্দ্র থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানান। রিজভী বলেন, ‘এই সমস্ত কর্মকর্তাবৃন্দকে না সরালে একটা বড় ধরণের বিপর্যয় তারা ডেকে আনবে।’