পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন সমন্বয় কমিটি বাতিল ইস্যুতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সংগঠনটির আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমানের পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ইসলামী জনমতকে ‘মৌলবাদ’ বলা ফ্যাসিবাদী আচরণ বৈ কিছু নয়। পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন সমন্বয় কমিটি বাতিল ইস্যুতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের বিবৃতি পড়ে আমাদের মনে হয়েছে, তারা ইসলামী জনমতকে বাদ দিয়েই তথাকথিত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চান। তাদের বক্তব্যে উগ্র সেক্যুলার ফ্যাসিবাদ কায়েমের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়েছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রমের পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য গঠিত সমন্বয় কমিটি বাতিল হয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার একটি বিবৃতি দেয় টিআইবি।
সেখানে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারের আপোসকে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে সংস্থাটি বলেছে, এ ধরনের পদক্ষেপ বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষার প্রতি রীতিমতো প্রহসন।
বিবৃতিতে বলা হয়ে, এ ধরনের স্বার্থান্বেষী মহলের অপপ্রচার, হুমকির প্রতি নতি স্বীকার করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আপোস করছে। যার উদ্বেগজনক উদাহরণ হলো পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন সমন্বয় কমিটি বাতিলের ঘটনা।
পাল্টা বিবৃতিতে হেফাজত বলেছে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলেও আমরা দেখেছি। ওয়ার অন টেররের ইসলামবিদ্বেষী ভাষা ও বয়ান থেকে এখনো তারা বের হতে পারেননি। আমরা কিন্তু ভুলে যাইনি যে সাম্রাজ্যবাদের দালালিস্বরূপ শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট রেজিমের ওপর সওয়ার হয়ে তারাই একসময় আলেমসমাজ ও ইসলামপন্থিদের দমন-পীড়নের মন্ত্রণা দিতো।
হেফাজত নেতারা বলেন, যেখানে হাসিনার শাসনামলজুড়ে জাতীয় পাঠ্যপুস্তকের সমস্যাদি নিয়ে ওলামায়ে কেরাম সর্বোচ্চ সোচ্চার ছিলেন, সেখানে নতুন বাংলাদেশে শিক্ষা বিশেষজ্ঞহীন ওই সমন্বয় কমিটিতে কোনো আলেম অন্তর্ভুক্ত না করাটা ছিল গুরুতর বৈষম্য। কিন্তু তা নিয়ে সেক্যুলারদের কোনো আলাপ বা প্রশ্ন নেই। উল্টো ‘মৌলবাদ’ ট্যাগ দিয়ে ইসলামী জনমতকে তারা কোণঠাসা করতে চান। তাদের এমন ফ্যাসিবাদী ভাষা ও আচরণের আমরা কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সেক্যুলার সুশীলতার আবরণে ব্র্যাক, টিআইবিসহ কিছু এনজিও এ দেশে সাম্রাজ্যবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। এ দেশে পশ্চিমা প্রভাব ও আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে তারা সাম্রাজ্যবাদীদের ফান্ড পেয়ে থাকে। সে কারণে তারা বিভিন্ন বিতর্কিত পশ্চিমা মূল্যবোধ ঢুকিয়ে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক দূষিত করতে তৎপর। কিন্তু এক্ষেত্রে ইসলামী জনমত তাদের জন্য বড় বাধা। কারণ ইসলামী জনমত সব সময় দেশের স্বার্থ, জাতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি, ধর্মীয় চেতনা ও সামাজিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে গঠিত হয়।