সুনামগঞ্জে ফের বন্যা দেখা দিয়েছে।
দ্বিতীয় দফার বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে নতুন নতুন এলাকা ডুবছে।
শুক্রবার (১২ জুলাই) রাত থেকে বৃষ্টি কম হওয়ায় পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও উজানের ঢলে নতুন করে তলিয়েছে বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৯টায় থেকে শনিবার ৯টা পর্যন্ত) সুনামগঞ্জে ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। তুলনামূলক বৃষ্টি কম হওয়ায় সুরমা নদীর পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে ৪৫ সেন্টিমিটার পানি কমেছে।
এদিকে সুরমা নদীর পানি কমলেও তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। তাহিরপুর উপজেলার বৌলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের চিকসা ও হোসেনপুর গ্রামের গ্রামীণ রাস্তাঘাটের উপর দিয়ে প্রবল বেগে পানি হাওরের দিকে প্রবেশ করছে। এতে রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল একরকম বন্ধ হয়ে আছে। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় মানুষের জীবন জীবিকায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল নুর বলেন, বন্যায় পানিতে থাকার জায়গা নাই। খাওয়া দাওয়া করার মত ঘরে কিছুই নেই। অনেক দিন ধরে কোনো কাজ করতে পারছি না। আমাদের গ্রামের প্রায় সবার একই অবস্থা। কেউই শান্তিতে নেই।
তাহিরপুর উপজেলার বাসিন্দা ফয়সাল আহমেদ বলেন, দুইদিন পরপর বন্যার পানিতে আমরা একেবারে শেষ। বন্যার হাত থেকে কবে রেহাই পাবো তাও জানি না। ঘরের জিনিসপত্র সব ভিজে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমার সিএনজি চালিত অটোরিকশা তিনদিন ধরে বাড়ি থেকে বের করতে পারছি না। পানিতে ডুবে আছে গাড়িটা। বন্যা কমার পর গাড়ি ঠিক করতে কত টাকা লাগবে আর টাকা কোথায় পাবো সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, সুনামগঞ্জ ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হওয়ার কারণে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও গতরাতে বৃষ্টি কম হওয়ায় নদীর পানি অনেকটা কমেছে। তবে ফের বৃষ্টি হলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে।