• ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

তারেক রহমান আওয়ামী সরকারের আক্রোশের শিকার: মির্জা ফখরুল

bijoy71news
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৮

বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরদেশে এখন অন্ধকার- শ্বাসরোধী পরিবেশ বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এ কারণে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস যথাযথভাবে পালন করতে পারিনি। নির্দোষ তারেক রহমান আওয়ামী সরকারের আক্রোশের শিকার।’
সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১১তম কারামুক্তি দিবস। ১১/১ মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের অসাংবিধানিক সরকারের নির্দেশে ২০০৭ সালে ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। আটকের পরে তার বিরুদ্ধে চালানো হয় অপপ্রচারের ধারাবর্ষণ। মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের কর্তৃত্ববাদী সরকার গণতন্ত্র ও ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধা দিয়ে তারেক রহমানকে নিয়ে নানা চক্রান্তের জাল ছড়ায়। মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে তা‌কে হেয় করার জন্য রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করা হয়। অথচ দেশের কোথাও তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ বা মামলা ছিল না।’
মির্জা ফখরুল ব‌লেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের বর্ধিতাংশ হচ্ছে ১/১১ এর সরকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ১/১১ সরকারের দায়ের করা মামলায় সম্পূরক চার্জশিট দিয়ে তারেক রহমানের নাম দেওয়া হয়েছে। ফলে এই নাম দেওয়া সরকারের প্রতিহিংসা চরিতার্থেরই নামান্তর। অর্থাৎ নির্দোষ তারেক রহমান আওয়ামী সরকারের আক্রোশের শিকার।’
দিনের পর দিন তা‌রেক রহমান‌কে রিমান্ডের নামে নিষ্ঠুর নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পৈশাচিক ও শারীরিক অত্যাচারে তাকে গুরুতর জখম করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্মম অত্যাচারে তারেক রহমান মুক্তির পরও হাসপাতালের বিছানা থেকে উঠতে পারেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারেক রহমানের ওপর নির্দয় নির্যাতন দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহিংসার প্রকাশ। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নেতৃত্বশূণ্য ও সামগ্রিকভাবে বিরাজনীতিকরণের ব্লু-প্রিন্ট বাস্তবায়নের জন্যই সে সময় বিএনপি চেয়ারপারসনকে মিথ্যা ও কাল্পনিক মামলায় গ্রেফতার এবং চক্রান্তমূলক বানোয়াট মামলায় আটক করে। তারেক রহমানকে শারীরিকভাবে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে। যে অভিযোগগুলো তার বিরুদ্ধে করা হয়েছিল, সেগুলো পরবর্তীতে বানোয়াট ও বানানো গল্প হিসেবে প্রমাণ হতে থাকে। আর সেজন্য জনগণ বিশ্বাস করে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যে মামলা ও সাজা দেওয়া হয়েছে তা গভীর ষড়যন্ত্রমূলক।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সমকালীন রাজনীতির সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস এবারে যথাযথভাবে পালন করতে পারিনি আমরা। কারণ, দেশে এখন অন্ধকার-শ্বাসরোধী পরিবেশ। তার ওপর সরকারের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের ধারা এখনও বয়ে চলেছে। নানাভাবে তাকে বিপর্যস্ত-বিপন্ন করার জন্য সরকার কূটচাল চালিয়েই যাচ্ছে। তথাকথিত আইনি প্রক্রিয়ার নামে মিথ্যা মামলা ও অন্যায় সাজা দিয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসাপূরণের গতি অব্যাহত আছে। ’
খালেদা জিয়া অন্যায় বিচারে কারাবন্দি বলে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রতিহিংসা চরিতার্থের নেশায় উম্মাদ সরকার দেশনেত্রীকে হয়রানি ও হেনস্তা করার জন্য বানোয়াট মামলা এবং পরিকল্পিত আইনি প্রক্রিয়ার নামে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। এক ব্যক্তির অদম্য ক্রোধ ও হিংসার চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটছে জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতীক খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ওপর। ’
এক ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশে বিরাজমান করছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গুম-খুন, লুটপাট, অর্থ আত্মসাৎ ও দখলের মহাসমারোহে গণতন্ত্রকে বন্দি করা হয়েছে। সারাদেশ আজ বন্দিশালায় পরিণত হয়েছে। দুঃশাসনের বিষাক্ত বলয়ে বন্দি দেশবাসী। এমতাবস্থায় আমরা তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস স্মরণ করছি। তার দীর্ঘায়ু কামনা করছি। দুঃশাসনের অবসানে অতি দ্রুত তার দেশে ফেরার জন্য দেশবাসীসহ সবাই প্রতীক্ষা করছি। ’
সংবাদ স‌ম্মেল‌নে উপ‌স্থিত ছি‌লেন, বিএন‌পির স্থায়ী ক‌মি‌টির সদস্য গ‌য়েশ্বর চন্দ্র রায়, সি‌নিয়র যুগ্ম মহাস‌চিব রুহুল ক‌বির রিজভী, যুগ্ম মহাস‌চিব খায়রুল ক‌বির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হো‌সেন, সহ সাংগঠ‌নিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল ক‌রিম শাহীন প্রমুখ।