যুক্তরাজ্যের সিটি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার জন্য নতুন করে চাপের মুখে পড়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টিউলিপের পারিবারিক সম্পর্ক এবং দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এ চাপ সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশে আর্থিক দুর্নীতির একটি মামলায় টিউলিপ সিদ্দিক, তার খালা শেখ হাসিনা এবং তাদের পরিবারের আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। এই তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই টিউলিপ যুক্তরাজ্যে চাপে রয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র ও জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী আবদুল মোতালিফের দেওয়া লন্ডনের একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন। এ বিষয়ে জানার জন্য টিউলিপ নিজেই কেয়ার স্টারমারের মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ড অ্যাডভাইজরকে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, তার কোনো ভুল নেই।
টিউলিপের অবস্থান নিয়ে যুক্তরাজ্যের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী প্যাট ম্যাকফ্যাডেন বলেছেন, টিউলিপ তদন্তের জন্য আহ্বান জানিয়ে সঠিক কাজ করেছেন। তিনি আরও বলেন, স্ট্যান্ডার্ড অ্যাডভাইজরের এ বিষয়ে তদন্ত করার ক্ষমতা রয়েছে।
তবে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি টিউলিপকে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছে। তাদের মতে, সরকারের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে তার অবস্থান অযৌক্তিক।
টিউলিপ ও তার পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একটি রাশিয়ান অর্থায়নে পরিচালিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত চলছে। অভিযোগ উঠেছে, ২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করতে মধ্যস্থতা করেছিলেন টিউলিপ।
এ ছাড়া, সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, লন্ডনের কিং’স ক্রস এলাকার একটি ফ্ল্যাট আবদুল মোতালিফ ২০০৪ সালে টিউলিপকে উপহার দিয়েছিলেন। তদন্তে জানা যায়, টিউলিপ এই ফ্ল্যাটটি থেকে বর্তমানে বার্ষিক ৯০ হাজার পাউন্ড আয় করছেন। তবে নির্বাচনী হলফনামায় ফ্ল্যাটটি উল্লেখ করেননি তিনি।
ফ্ল্যাট কেলেঙ্কারির এই ঘটনায় যুক্তরাজ্যে টিউলিপের পদত্যাগের চাপ আরও বেড়েছে।