গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত এলাকায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের জন্য বরাদ্দকৃত বাস ভবনে এখন পালন করা হচ্ছে পশু। খুদ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাস ভবন থেকে মাত্র ১০ গজ দূরে অবস্থিত উপজেলা চেয়ারম্যানের বাস ভবনে গরু খামার গড়ে তোলা হলেও বিষয়টি জানেননা ইউএনও। আর এ গরুর পরিচর্যায় নিয়োজিত রয়েছেন ইউএনও অফিসের এক কর্মচারী। মূলত তাকে সরকারি ব্নে দেয়া হয় ইউএনও অফিসের পরিচর্যা করার জন্য, কিন্তু অফিস পরিচর্যা ছেড়ে তিনি অফিসের সময়টা কাটান গরুর পরিচর্যায়।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সংরক্ষিত উপজেলা পরিষদ আবাসিক এলাকার ভেতরে অরক্ষিত পুরনো একটি ভবনের ভেতরে গরু ঢুকাচ্ছেন ইউএনও অফিসের কর্মচারী আব্দুস সেবাহান। সরকারি ভবনে গরু ঢুকানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিগত ২/৩ মাস থেকে তিনি এখানে গরু রাখেন। এটা কি গরুর গোয়ালা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জানিনা, আমাকে রাখা হয়েছে প্রতিদিন এখান থেকে গরু বের করে বাহিরে নিয়ে খাওয়ানো এবং সন্ধ্যায় আবার ঢুকানো। কার হুকুমে বা এ খামারের মালিক কে জানতে চাইলে প্রথমে নাম না বলে, ফোনে কথা বলতে বলেন। পরে চাপ সৃষ্টি করলে বলেন, নির্বাহী অফিসারের অফিস সহকারি রুম্মান আহমদ নওশাদ এ খামারের মালিক। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি এখানে খামার তৈরী করেছেন। ভবনের ভেতরে যেতে চাইলে আব্দুস সোবহান বাধা দেন, পরে ভেতরে গিয়ে দেখা যায় মূল ভবনের একটি বড় কক্ষে ইট দিয়ে গরুর গোয়ালা তৈরী করা হয়েছে। ভেতরে ছোটবড় প্রায় ৮/১০ টি গরু বাধা রয়েছে। ভবনের অন্য আরেকটি কক্ষের নীচে বিছানা ও কাপড় রয়েছে। কেউ এখানে বসবাস করেন। তবে বিষয়টি এড়িয়ে যান আব্দুস সোবহান। আর ভবনের বাহিরে চারপাশ ঘুরে সবজি চাষ করার জন্য বাশের মাচা তৈরী করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এখানে উৎপাদিত সবজি ইউনএনও’র অফিস সহকারি নিয়ে যান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাস ভবন লাগোয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সরকারি বাস ভবন পরিত্যক্ত না করে এভাবে গরুর খামার গড়ে তোলায় খুদ উপজেলা প্রশাসনের অনেকের মাঝেও অসন্তোষ বিরাজ করছে। অনেকে বলেন, গরুর খামার ও সবজি বাগান তৈরী করায় সংরক্ষিত এলাকায় এ ভবনের আশপাশে নানা লোকজনের আনাগোনা দেখা যায়।
স্থানীয় অনেকে অভিযোগ তুলেন, ভবনটি ইউএনও`র বাসভবনের পাশে থাকায় একেবারে নিরিবিলি এলাকা। এ সুযোগে যেকোন সময় অসামাজিক কার্যকলাপ বা অপরাধ ঘটতে পারে। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব খামার উচ্ছেদ ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান সচেতন মহল।
বিষয়টি জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিলটন চন্দ্র পালের সাথে কথা বললে প্রথমে তিনি বলেন, এব্যাপারে বক্তব্য দিতে হলে আমার উপর মহলের অনুমতি নিয়ে বলতে হবে। পরে অবশ্য বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি, আমার জানামতে উপজেলা চেয়ারম্যান ভবন এখনও পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়নি। এই ভবনে গরুর খামারের বিষয়টি আমার জানা নেই, খবর নিয়ে জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।