যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, গত ১৬ বছরে চিকিৎসা খাতকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। গত ৪ আগস্ট মেডিকেল কলেজগুলো থেকে শান্তি সমাবেশ বের হওয়া তার প্রমাণ। গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ থেকে পালানো শেখ হাসিনা সরকার দেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রকে রাজনীতিকরণ করে রেখেছিলেন।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে ‘জুলাই বিপ্লবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ‘ শীর্ষক এক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, চিকিৎসা খাত ছাড়াও আরও অনেক খাতকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। যেখানে রাজনীতি থাকার কোনো প্রশ্নই উঠে না। ভবিষ্যতে সরকার বা রাজনৈতিক দলগুলো যেন বিষয়টির দিকে খেয়াল রাখে। এ সময় সংস্কার ও দেশ পুনর্গঠনে সবার মতামত প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের সময় ক্যাম্পের মাধ্যমে আহতদের সেবা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। সেই আহ্বানে চিকিৎসকরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। এ সময় আন্দোলনে পাশে থাকার জন্য চিকিৎসকদের ধন্যবাদও জানান তিনি।
ঢাকা মেডিকেলের অর্থোপেডিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল ইসলাম আকন বলেন, আমাদের হাসপাতাল থেকেই কিছু চিকিৎসকরা শান্তি সমাবেশে গিয়েছিলেন, এটা কলঙ্কজনক। জুলাই আন্দোলনে যারা আহত হয়ে হাসপাতালে আসছিল চিকিৎসা নিতে, তখন সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কৌশলে বোঝানো হচ্ছিল আহতরা সবাই দোষী। তারা সেতু ভবনে আগুন দিয়েছে, মেট্রোরেল ভাঙচুর করেছে। তাদের জন্য কতটুকু করব, কতটুকু করব না তা বলে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি আমরা যারা আগ্রহ দেখিয়ে তাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিচ্ছিলাম সেই সকল চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছিল।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. ফারুক আহাম্মদ বলেন, যারা ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিল তাদের ছবি আছে। তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ডক্টর মুভমেন্টস ফর জাস্টিস ব্যানার থেকে এদিন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দাবি তোলেন, এমবিবিএস/বিডিএস ব্যতিত কেউ নামের আগে ডা. লিখতে পারবে না। প্রেসক্রিপশন করতে পারবে না। এমআটিএসদের ইন্টার্নশিপ সরকারি/বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে বাতিল করতে হবে। সকল ইন্টার্ন, রেসিডেন্ট, ননরেসিডেন্ট এফসিপিএস ট্রেইনি ডাক্তারদের ভাতা বৃদ্ধিসহ সকল বেসরকারি ডাক্তারদের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো তৈরি এবং অতিশিগিরই তা বাস্তবায়ন করতে হবে। ডাক্তারদের জন্যে আলাদা কমিশন গঠন করে মেডিকেল সাইন্স ভিত্তিক বিসিএস এক্সামের ব্যবস্থা করতে হবে এবং বয়সসীমা ৩৪ করতে হবে। চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে এবং স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগ দিতে হবে। ডাক্তারদের পোস্টিং এবং পদন্নোতির জন্য সুনির্দিষ্ট রুপরেখা প্রণয়ন এবং নিয়মিতকরণ করতে হবে।