বরিশাল নগরের পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের নাম পাল্টে জিয়ার নামে সাঁটানো সেই সাইনবোর্ড খুলে ফেলা হয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশন সেই সাইনবোর্ড খুলে ফেলেছে বলে জানা গেছে।
মৎস্য ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নামে বরিশালে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র করা নিয়ে সম্প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় ওঠে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে। এ নিয়ে দৈনিক আমাদের সময়সহ একাধিক দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়।
নগরের ৯ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সদস্যসচিব ও মৎস্য ব্যবসায়ী খান মোহাম্মদ কামাল বলেন, ‘সোমবার বিকেলে দেখলাম সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলেছে। আমি এর সঙ্গে জড়িত নই। সাইনবোর্ড সাঁটিয়েছে মৎস্য ব্যবসায়ী কামাল সিকদার ও জহির সিকদার।’
জানা গেছে, ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ বেচাকেনাকে ঘিরে বরিশাল পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ব্যাপক জমজমাট থাকে। সেখানে দৈনিক লাখ লাখ টাকার মাছ বেচাকেনা হয়। ইলিশসহ নানা ধরনের মাছ নিয়ে বাণিজ্য চলে এই মোকামে। ৫ আগস্টের পর মোকামটি দখল করে জিয়ার নামে সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়। এ নিয়ে জেলা ও মহানগর বিএনপির মধ্যেও বিভক্তি দেখা দেয়।
দলটির জেলা (দক্ষিণ) বিএনপি সম্প্রতি এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, যারা স্বৈরাচারের দোসর, তারাই এভাবে মাছের বাজারের সঙ্গে জিয়ার নাম জুড়ে দিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম করছেন।
এর আগে গত ৫ আগস্টের পর বরিশাল মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের নাম পরিবর্তন করে একটি ব্যানারে ‘শহীদ জিয়া মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র’ লিখে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর দৈনিক আমাদের সময়ে ‘বরিশালে জিয়ার নাম ব্যবহার করে জেলা মৎস্যকেন্দ্র দখল’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে হইচই পড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। সম্প্রতি পাকাপোক্তভাবে আগের ব্যানার সরিয়ে লোহার সাইনবোর্ডে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের নাম জিয়ার নামে করা হয়েছিল।
এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও বরিশাল সদর থানা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জহির সিকদার, সাধারণ সম্পাদক ও মৎস্যজীবী দলনেতা কামাল সিকদার, ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান মিলন।
বরিশাল সদর থানা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রদল নেতা জহির সিকদার বলেন, ‘১৯৯৫ সালে জিয়াউর রহমানের নামে পোর্ট রোড মৎস্য মোকামের জমি কেনা হয়। ওই সময়ও জিয়ার নামেই এই ঘাটটি ছিল।’
জহির সিকদার অভিযোগ করে বলেন, ‘নগর বিএনপির এক শীর্ষ নেতার শেল্টারে আওয়ামী লীগের দোসর খান হাবিবের ভাই খান কামাল এখনো ইজারা বাবদ খাজনা নেন। আমরা দোসর হলে তো জিয়ার নামে সাইনবোর্ড দিতাম না।’