• ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

গোলাপগঞ্জের সুনামপুর-চন্দরপুর সেতু ফের ঝুঁকিপূর্ণ

bijoy71news
প্রকাশিত অক্টোবর ১, ২০২৪
গোলাপগঞ্জের সুনামপুর-চন্দরপুর সেতু ফের ঝুঁকিপূর্ণ

সিলেটের গোলাপগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মিত চন্দরপুর-সুনামপুর সেতুর এপ্রোচে একের পর এক ধসের ঘটনায় বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ বিকল্প সড়কে চলাচলে দিন দিন ঝুঁকি বাড়ছে। তবে এর মধ্যে সুনামপুর অংশে সেতুর এপ্রোচে বড় ফাটল ধরে নিচের মাটি ধসে পড়েছে। যার ফলে বড় ধরনের দূর্ঘটনার শঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দা, যান চালক ও সাধারণ যাত্রীরা।

এর আগে ২০২২ সালের বন্যা পরবর্তী সময়ে সেতুটির চন্দরপুর অংশে একাধিক ধসের ঘটনার পর ভাঙন কবলিত স্থানগুলো স্থানীয় প্রকৌশল অফিস প্রাথমিকভাবে সংস্কার করলেও ঝুঁকি রয়ে গেছে।

সরেজমিনে চন্দরপুর-সুনামপুর সেতুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সেতুর উভয় পাশের এপ্রোচে বেশ কয়েকটি ধস ও ভাঙনের কারণে নিচের মাটি ধেবে দিন দিন শক্তি হারাচ্ছে। এ ছাড়াও নতুন করে সেতুর মধ্যে বেশ কিছু ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে বিগত দিনে ধসে পড়া অংশ ইতোমধ্যে মেরামত করা হলেও ঝুঁকি কাটেনি। এপ্রোচের উভয় পাশের রাস্তায় এবড়োখেবড়োভাবে ইট গাথুনি দিয়ে বৃষ্টি পানি নিষ্কাশনের সুযোগ তৈরি করায় যান চলাচলে তীব্রভাবে ব্যাঘাত ঘটছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত চন্দরপুর-সুনামপুর সেতু নির্মিত হলেও এপ্রোচ সড়ক নির্মাণে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতা ও খামখেয়ালিপনার কারণে অনিয়ম ঘটে। এপ্রোচ সড়ক নির্মাণকালে সেতুর পানি নিষ্কাশনে ড্রেনেজ সিস্টেম পৃথক করা হয়নি। যার ফলে সেতু থেকে বৃষ্টির পানি উভয়পাশের এপ্রোচ দিয়ে গড়িয়ে পড়ে সড়কে ধস ও ফাটল তৈরি হচ্ছে। সেতুটির উপর যান চলাচল স্বাভাবিক ও ঝুঁকিমুক্ত রাখতে দ্রুত স্থায়ীভাবে এপ্রোচ সড়ক সংস্কারে উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, সেতুর এপ্রোচ সড়কের সংস্কার দ্রুত সময়ের মধ্যে না করা হলেও সেতুটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বিষয়টির গুরুত্ব দিয়ে দেখতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

সিএনজি অটোরিকশা চালক শাহাজাহান আহমদ জানান, সেতুর দু’পাশের এপ্রোচের ধসের কারণে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যানবাহন চলাচল করছে। একইসাথে এপ্রোচের উভয় পাশের নিচের দিকে ধস ও ধেবে পড়ার কারবে সেখানকার বাসিন্দাদের উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছে।

ব্যাটারিচালিক অটোরিকশা চালক মনু মিয়া বলেন, বন্যার পর থেকেই ব্রীজের দু’পাশের এপ্রোচে একটু একটু করে ভাঙন শুরু হয়েছে, যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। ঝুঁকি নিয়ে আমরা যাতায়াত করছি। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রুত স্থায়ী সমাধান করলে আমরা উপকৃত হতাম।

সড়ক ও জনপদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের সড়ক নেটওয়ার্কে অন্তর্ভুক্ত সেতুগুলোর প্রকল্পের আওতায় সিলেটের গোলাপগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মিত ঢাকাদক্ষিণ-সুনামপুর-চন্দরপুর-বিয়ানীবাজার সড়কে কুশিয়ারা নদীর উপর ২শ’ ৪৯ দশমিক ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ২৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলার প্রকৌশলী দিপক কুমার বলেন, বর্তমানে ব্রিজের শেষের অংশে যে জায়গাটি নতুন করে ভেঙেছে, সেটি পাশ্ববর্তী গোলাপগঞ্জ উপজেলার প্রকৌশল অফিসের আওতাধীন। খুব সম্ভবত তারা মেরামতের জন্য কাজ করছে।

পরে গোলাপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসানের যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সেতুর যে অংশে সমস্যা দেখা দিচ্ছে, আমরা প্রাথমিকভাবে সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও স্থায়ীভাবে সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন মহলে যোগাযোগ করা হয়েছে। আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে স্থায়ীভাবে কাজ করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।