শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
রোববার (১৮ আগস্ট) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মো. জাকী-আল-ফারাবীর আদালতে এই মামলার আবেদন করেন বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মতিঝিল থানার ওসি নির্দেশ দিয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী নাজমুল হাসান তালুকদার।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, এসবির সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম, পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, মতিঝিল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক, মতিঝিল ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনসুর আহমেদ, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা ইমরান, সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ সাঈদ, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, আওয়ামী লীগ নেতা আকরাম হোসেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফারজানা আক্তার, সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ আক্তার, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আনিসুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান শেখ সালাউদ্দিন, মতিঝিল জোনের সাবেক উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম, হামদর্দ গ্রুপের পরিচালক মেজর (অব.) ইকবাল, মতিঝিল জোনের সাবেক উপকমিশনার আশরাফুজ্জামান, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এবং মো. শাহাদাত হোসেন, মো. এমদাদুল হক ও শেখ শাহ আলম তালুকদার।
মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় ব্লগাররা ধর্মীয় অবমাননা ও হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি এবং আপত্তিকর লেখালেখি করার প্রতিবাদে হেফাজত ইসলাম ১৩ দফা দাবি সরকারের কাছে দেয়। সরকার দাবি না মানায় ২০১৩ সালে ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে রাস্তায় অবস্থান নেয় তারা। ওইদিন রাত ১১টা থেকে পরের দিন বেলা ১১টা পর্যন্ত রাস্তা ও বিদ্যুৎলাইন বন্ধ করে শেখ হাসিনার মদদে আসামিদের যোগসাজশে অন্য আসামিরা এজাহারে বর্ণিত পুলিশ ও আর্মি সদস্যরা মিলে নিরীহ মাদরাসাছাত্র ও পথচারীদের ওপর গণহত্যা চালায়। তাদের হত্যা করে লাশগুলো সিটি করপোরেশনের গাড়িতে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে গুম করে। এসময় বহু মাদরাসাছাত্র হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তাদের অভিভাবকরা সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা ও জিডি করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ কোনো মামলা নেয়নি। একজন রাজনীতিবিদ তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষকে নির্বিচার গণহত্যার কারণে আদালতে অভিযোগটি এনেছেন।
এ নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১১টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে ৮টি হত্যা, একটি অপহরণ এবং দুটি মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে।