বিডিআর বিদ্রোহে হত্যাকাণ্ডের বিচারকার্য চালানোর জন্য রাজধানীর বকশী বাজারে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতের এজলাস পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সবকিছু পুড়ে যাওয়ায় বিচারকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। ওই মাঠে আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে অস্থায়ী আদালত বসিয়ে বিডিআর বিদ্রোহের বিচারকাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাতেই আদালতের এজলাস পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, এজলাস কক্ষের কিছুই অবশিষ্ট নেই। বিচারকের বসার টেবিল-চেয়ার থেকে শুরু করে সবকিছু পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বিচারকাজ চলার মতো পরিস্থিতি নেই।
সকালে আদালত পরিদর্শনে আসেন বিচারপতি ইব্রাহিম মিয়া। এ সময় তার সঙ্গে কথা বলেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। বিচারকাজ চালানোর জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। তবে পরবর্তী বিচারকাজ কোথায় চালানো হবে সে বিষয়ে জানা যায়নি।
আদালত প্রাঙ্গণে এসে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ চিফ প্রসিকিউটর মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘বিচারকাজ চালানোর মতো স্বাভাবিক অবস্থা নেই। বিচারক এখানে উপস্থিত হয়েছেন। এখন ওনার পক্ষ থেকে কী নির্দেশনা আসে সেটার অপেক্ষায় আছি।’
এদিকে অস্থায়ী আদালত বসানোর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মাদ্রাসার সামনের সড়কে অবস্থান নেয় আলিয়ার শিক্ষার্থীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সামনের সড়ক, বকশী বাজার মোড় এবং আশপাশের গলির প্রবেশমুখ বাঁশ দিয়ে আটকে রাখে শিক্ষার্থীরা। এতে বকশীবাজার মোড় থেকে শিক্ষা বোর্ড এবং চকবাজারের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে বুধবার রাতভর আন্দোলনের পর আজ সকাল থেকে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সড়ক ছাড়বেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে। হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয়। এতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।