• ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বাজেট নিয়ে যা বললেন আ.লীগ নেতা কামরান ও আসাদ…

bijoy71news
প্রকাশিত জুন ২, ২০১৬

kamranনুরুল হক শিপু :::
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন। বাজেটের বিভিন্ন দিক নিয়ে সিলেটের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের মতামত গ্রহণ করা হয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ঘোষিত বাজেটকে উন্নত দেশ গড়ার বাজেট বলে অভিহিত করেছেন। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেছেন, এটি ব্যবসাবান্ধব বাজেট।
আওয়ামী লীগ : সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘সিলেটের কৃতীসন্তান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংসদে গণমুখী বাজেট উপস্থাপন করেছেন। এই বাজেট আগামী দিনে দেশের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নত রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের বাজেট।’
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বাজেটের আকার অনেক বড়। এর মানে বুঝতে হবে, এটি উন্নয়নের বাজেট। বাজেটে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য বর্ধিত বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বড় বাজেটের কারণে গ্রাম পর্যায়ে ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি আগের চেয়ে অনেক চাঙা হবে। এটি একটি গণমুখী বাজেট। সবদিককে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়নমুখী একটি বাজেট এবার ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনায় সিলেটের সন্তান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পরিশ্রমের ঘোষিত বাজেট দেশকে দ্রুত মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।’
জাতীয় পার্টি : জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় হুইপ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘অতীতে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে ঠিকই; কিন্তু বাজেট পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়ন করা হয়নি। এবারও বিশাল আকারের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের আশা ছিল, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, কৃষি ও স্বাস্থ্যখাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কিন্তু তা করা হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী দুদিন সংসদে বাজেট নিয়ে আলোচনা হবে। আমরাও বাজেট পর্যালোচনা করব। জনগণের স্বার্থে সংসদে গঠনমূলক আলোচনা করব। দুদিন পর বিরোধীদলীয় নেত্রী, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ সংবাদ সম্মেলন বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন।’
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, ‘এ বাজেট গরিবের বাজেট নয়। উচ্চভিলাষী বাজেট। যা কখনই বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। কারণ দেশে প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি চলছে। বাজেট বাস্তবায়ন করতে হলে আগে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।’
বিএনপি : মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, ‘বাজেটে শিল্পখাতে বিনিয়োগের বিষয়টি আসেনি। যার কারণে কর্মসংস্থান ব্যঘাত ঘটবে। শিল্পখাতে বিনিয়োগের দিঙ্নির্দেশনা না থাকায় ব্যাংকে অলস টাকা পড়ে রয়েছে। ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে খারাপ পথে ব্যাংকের টাকা বিনিয়োগে উৎসাহি হচ্ছেন। শিল্পখাতে বিনিয়োগ নেই বলে দেশে এখন গ্যাস সংকট প্রকট হয়েছে। বাজেটে অতিরিক্ত প্রবৃদ্ধি ঘোষণা করা হয়েছে। যা অর্জন করা সম্ভব হবে না বলে মনে হচ্ছে না।’
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘উচ্চাভিলাষী বাজেট। শুভংকরের ফাঁকি দেওয়ার বাজেট এটি। এরকম উচ্চাভিলাষী বাজেট সামগ্রিকভাবে বাস্তবায়নের সুযোগ আছে বলে মনে হয় না।’
সিলেট চেম্বার : বাজেটকে শিল্পবান্ধব আখ্যা দিয়ে সিলেটে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন সিলেট চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি সালা উদ্দিন আলী বলেন, এবারের বাজেটটি শিল্পবান্ধব। এতে আমরা সন্তুষ্ট। বিশেষ করে সিলেটের পর্যটন খাতে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সিলেটের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের কথা বিবেচনায় নিয়েই সিলেট-তামাবিল সড়কের উন্নয়ন, রেলওয়ে উন্নয়নকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর এ অবদান অর্থমন্ত্রীর। তাঁকে সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার : সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, এবার বাজেটে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। প্রকল্পের মধ্যে ১৪২ তলা বিশিষ্ট আইকন টাওয়ার নির্মাণ উল্লেখযোগ্য একটি উদাহরণ। একই সঙ্গে বাজেটে দেশব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যা অবশ্যই ইতিবাচক দিক। সিলেটের উন্নয়নে অর্থমন্ত্রী রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে পর্যটন নগরী হিসেবে বিশেষ কিছু প্রকল্প রেখেছেন। এসব প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হলে সিলেটের পর্যটন খাতেই কর্মসংস্থান তৈরি হবে। পাশাপাশি সিলেট হবে ব্যবসাবান্ধব নগরী।
সুজন : সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘যে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। গত বাজেটও সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এবারের বাজেটও মানুষকে আশার আলো দেখানোর বাজেট। ধারণা ছিল, এবার শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হবে। কিন্তু তা করা হয়নি। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু সরকার শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ ২১ ভাগ বাজেট ঘোষণা করে নজির সৃষ্টি করে। কিন্তু তাঁর দলের বর্তমান সরকার এ বাজেটের মাধ্যমে আমাদেরকে আশাহত করেছে।’