বি৭১নি ডেস্ক :ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইনিংসের ১৫তম ওভারে বোলিংয়ে এলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। মিডিয়া প্রান্ত থেকে দৌড় শুরু করলেন। গ্যালারির হাজারো দর্শকের ‘মাশরাফি, মাশরাফি’ ধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো স্টেডিয়াম। এই সিরিজের আগে মাশরাফির খেলা না খেলা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন নড়াইল এক্সপ্রেস।খেলার জগতের পাশাপাশি রাজনীতির আরেক জগতে পা রাখায় মাঠের পারফরম্যান্স কেমন হবে মাশরাফির- এ কৌতূহলে হয়তো দর্শকদের বাড়তি মনোযোগ কাড়েন ওয়ানডে দলের কাপ্তান। মাশরাফির প্রথম বলেই চার মারলেন ড্যারেন ব্র্যাভো। অবশ্য ওভারের পরের পাঁচ বলে রান দেননি।এই যে শুরু, বোলিংয়ে দিনশেষে বাংলাদেশের নায়ক মাশরাফিই। তার প্রথম স্পেলটি ছিল চোখ-ধাঁধানো। ৭ ওভারে মাত্র ১৪ রান দেন। উইকেট পান দুটি। পরে দুই স্পেলে ৩ ওভার বোলিং করে পান আরও একটি উইকেট। ১০ ওভারে মাত্র ৩০ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করে দলের সেরা বোলার ওয়ানডে কাপ্তানই।মাশরাফির দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দুটি জবাব দিয়েছে, এক. সিরিজ শুরুর আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, শুধু অধিনায়ক কোটায় খেলেন মাশরাফি। অসাধারণ প্রজ্ঞাসম্পন্ন দুরদর্শী এক অধিনায়ক তিনি। তার নেতৃত্বের গুণে সবাই মুগ্ধ। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক, তাতে দ্বিধা থাকার কথা নয় কারও। কিন্তু অধিনায়কত্ব ছাপিয়ে মাশরাফি যে একজন দুর্দান্ত বোলারও, সেটি তার পারফরম্যান্সেই সাক্ষ্য দেয়। চলতি বছর ওয়ানডেতে শতকরা ৬০ ভাগের বেশি সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। এই সাফল্যে মাশরাফি বোলিংয়ের অবদান অপরিসীম। গতকাল আবারও বিসিবির প্রধানের ব্যক্তব্য ভুল প্রমাণ করলেন নড়াইল এক্সপ্রেস। দুই. রাজনীতির সঙ্গে যোগ দেওয়ায় খেলায় কী পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারবেন মাশরাফি? এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানিয়েছিলেন, কঠিন পরিস্থিতি সামলানোর অভিজ্ঞতা আছে মাশরাফির। আসলেই অন্য ধাতুতে গড়া তিনি। প্রধান নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদানও দিলেন এই কাপ্তান।২০০তম ওয়ানডে খেলেছেন মাশরাফি। বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে শুধু তিনিই এই মাইলফলক স্পর্শ করলেন। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ম্যাচটিও স্মরণীয় করে রাখলেন এই অভিজ্ঞ পেসার। ১৯৬ ওয়ানডে খেলেছেন মুশফিক। সাকিব খেলেছেন ১৯৩টি ম্যাচ। মাশরাফি ক্যারিয়ারের গোধূলি লগ্নে। ঘরের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলছেন কিনা, তা পরিষ্কার করে বলেননি। বয়স ৩৬ চলছে। কিন্তু এই বয়সেও মাশরাফির বোলিংয়ের ধার যেন আরও বাড়ছে। বোলিংয়ে উজ্জ্বল দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছেন; মাশরাফিতে সাফল্য পাচ্ছে বাংলাদেশও।