বি৭১নি ডেস্ক : বাংলাদেশের কোন ভোটার স্বাধীনতা বিরোধী নয় দাবী করে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক সাংসদ, সাবেক ডাকসু ভিপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশে যারা ভোটার এরা কেউ স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) ৭ দফা ১১ দাবিতে উল্লেখ আছে, যুদ্ধপরাধী ছাড়া দেশের ৫৪ হাজার বর্গমাইলের যারা নাগরিক, তারা সবাই এদেশের সমান ব্যক্তিত্ব। স্বাধীনতা বিরোধী-অবিরোধী বলে কোন বিষয় না। সবাই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের।’
মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা সম্পর্কে বলেন, ‘যারা অপশাসনের বিরুদ্ধে তারাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের। যারা দূর্ণীতির বিরুদ্ধে, লুটের বিরুদ্ধে তারাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের। মুক্তিযুদ্ধ মানে ব্যাংকের টাকা বিদেশে পাঠানো নয়। মুক্তিযুদ্ধ মানে দেশের কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা নয়।’
দেশের বীর সন্তানদের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বা অন্যান্য নেতৃবৃন্দ যেমন তাজউদ্দিন, মুজিবনগর সরকারসহ জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর নেতৃত্বে সেক্টর কমান্ডাররা ছিলেন জেনারেল জিয়াউর রহমান, জেনারেল শফিউল্লাহ, জেনারেল খান মোশাররফ তিন ব্রিগেড ছিলেন বা হাজার হাজার সামরিক বাহিনী, মুজিব বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন তারা কিন্তু লুটপাটের বা টাকা আত্মসাতের জন্য, দেশ ধ্বংস করার জন্য এই বাংলাদেশকে স্বাধীন করেন নাই। স্বাধীনতার লক্ষ্যই হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই হচ্ছে গণতন্ত্র। তাই ৫৪ হাজার বর্গমাইলের ভিতরে যারা ভোটার আছেন তারা সবাই আমার বন্ধু বলে আমি মনে করি।’
বক্তব্য শেষে তিনি ‘জয় বাংলা, জয় হোক সকলের, জয় ধানের ছড়া, জয় বঙ্গবন্ধু’ উল্লেখ করেন।
বুধবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে কুলাউড়ার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তিনি এই মনোনয়নপত্র জমা শেষে তিনি এই কথাগুলো বলেন। এসময় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর)- এর প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক তিনবারের সাংসদ নবাব আলী আব্বাস খান সহ স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন।
উল্লেখ্য, কুলাউড়া থেকে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ প্রতীক নিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন সুলতান মনসুর। এরপর ২০০১ সালে তিনি বিএনপি থেকে মনোনয়ন না পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী এমএম শাহীনের কাছে পরাজিত হন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৭ সালের জানুয়ারিতে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে দলের মধ্যকার সংস্কারপন্থী গ্রুপের সদস্য হয়ে ওঠেন এমন অভিযোগ ওঠলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়তে থাকে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি তিনি। তৎকালীন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নবাব আলী আব্বাস খানের সাথে একাত্ম হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন এবং সেই নির্বাচনে নবাব আলী আব্বাস সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে তিনি নির্বাচনকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন সুলতান মনসুর। সরকারবিরোধী এই জোটে বিএনপিও যোগ দিলে বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষে প্রার্থী হন সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা।