মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি ছড়া ও ফসলি জমি থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে সিলিকা বালু ও ফসলি জমি থেকে মাটি উত্তোলনের ছবি তোলায় এক সাংবাদিককে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে বালু খেকোদের বিরুদ্ধে। এসময় তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।
স্থানীয়রা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ওইদন রাতেই ভুক্তভুগির খালা খুশবানু বেগম (৬০) বাদী হয়ে সাতজনের নামে শ্রীমঙ্গল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযোগটি আমলে নেয়।
মামলার আসামীরা হলেন উপজেলার আলীসারকুল গ্রামের আলকাছ মিয়া চৌকিদারের ছেলে ফেরদৌস (৩০), শাহদাতপুর গ্রামের মৃত আছকর মোল্লার ছেলে কবির মোল্লা (৪৫), আলীসারকুল গ্রামের মৃত আছকির মিয়ার ছেলে নানু মিয়া (৪০), মৃত আলকাছ মিয়ার ছেলে ফয়েজ মিয়া (৪২), ল্যাংড়া ইউনুসের ছেলে কাওছার মিয়া (৩০), শাসন গ্রামের আবরু মিয়ার ছেলে আসলাম মিয়া (৩২) ও বাদে আলীসাকুল গ্রামে কই মিয়ার ছেলে দুদু মিয়া (৩৪)।
গত ৪ অক্টোবর বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার সাংবাদিক তানভীর ইসলাম কাউছার।
মামলার অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের ইলামপাড়া, কদমতলা, শাসন, ভীমশি, নতুন বাগান, সাতগাঁও, ইছামতিসহ বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে সিলিকা বালু উত্তোলন করিয়া পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করিতেছে ওই এলাকার একটি বালু খেকো চক্র। বিশেষ ফসলি জমিতে বিশাল বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং পার্শ্ববর্তী জমির মালিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসব খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সাংবাদিক তানভার ইসলাম কাউছার। সেখানে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ছবি তোলেন এবং ঘটনাস্থল থেকে ফেরার পথে ভূনবীর চৌমুহনা এলাকায় একটি দোকানের সামনে রাস্তার ওপর পৌঁছা মাত্রই অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী চক্রের ফেরদৌস (৩০) কবির মোল্লা (৪৫), নানু মিয়া (৪০), ফয়েজ মিয়া (৪২),কাওছার মিয়া (৩০), আসলাম মিয়া (৩২),দুদু মিয়া (৩৪) অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জন পূর্বপরিকল্পিতভাবে রাস্তায় ফেলে এলোপাথাড়ি মারপিট করতে থাকে। পরে আশে পাশের দোকানদার এবং পথচারী লোকজন জড়ো প্রতিবাদ করলে পরে বালু উত্তোলনকারী চক্র ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তার কাছে একটি আইফোন, সাংবাদিকতার আইডি কার্ড নিয়া যায়। পরে আহত অবস্থায় একটি সিএনজি অটোরিক্সা যোগে প্রথমে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে নিয়া গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
সাংবাদিক তানভীর ইসলাম কাউছার অভিযোগ করেন,অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের হোতারা তাঁকে নির্যাতন করেছেন। তার হাত, মাথা, কপাল ও বুকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি বর্তমানে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ’
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, ‘এঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলা নং ০৫(১০)২০২৩।
শ্রীমঙ্গল ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি স›দ্বীপ তালুকদার বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নিয়ে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট হচ্ছে। শিগগিরই ওইসব এলাকায় অভিযান করবো।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পাহাড়ি ছাড়া ও ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে ড্রেজাল মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন।
মৌলভীবাজার হাসপাতালে আহত সাংবাদিক চিকিৎসা নিচেছন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/সাইফুল/ইআ-০৫