সমবায় ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ মহি ব্যাংকে রক্ষিত ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ চুরির সাথে সরাসরি জড়িত। তার সহযোগি হিসেবে আছেন, তার ভাই-ভাগ্নেরা। কৌশলে তারা ব্যাংকটি থেকে হাতিয়ে নেন দেড়শ’ কোটি টাকা মূল্যের বিপুল পরিমাণের স্বর্ণ।
অভিযোগও আছে, ভল্ট থেকে স্বর্ণ চুরির ঘটনা ধামাচাপা দিতে এমন কিছু নেই যা মহি করেননি। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত তো করতেই দেননি উল্টো মন্ত্রণালয়ের তদন্তও আদালতে মামলা করে স্থগিত করান তিনি। আবার চার্জশিট থেকেও সুকৌশলে বাদ দেন নিজের নাম।
একশ’ দু’শো নয় ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ চুরি! তাও সমবায় ব্যাংকের ভল্ট থেকে। যা এখন রীতিমত টক অব দ্য কান্ট্রি! ঘটনাটা সেই ২০২০ সালের। সেই বছর মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত চার মাসে দেড়শ’ কোটি টাকা মূল্যের বিপুল পরিমাণের এই স্বর্ণ গায়েব হওয়ার ঘটনা অনুসন্ধানে মিললো চাঞ্চল্যকর নতুন সব তথ্য!
সমবায় ব্যাংকের স্বর্ণ গায়েবের ঘটনায় ২০২১ সালে স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। মামলার এজাহারভূক্ত এক নন্বর আসামী করা হয় সমবায় ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ মহিকে। আসামী করা হয় আরও ৮ জনকে। কিন্তু পরে রহস্যজনকভাবে চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয় মহির নাম।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৯ সাল রাজনৈতিক বিবেচনায়, সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মহি। এরপর ভল্টের দায়িত্ব দেয়া হয় তার ভাগ্নে ও সিনিয়র অফিসার ক্যাশ নূর মোহাম্মদ এবং চাচাতো ভাই ব্যাংকের এজিএম হেদায়েত কবিরকে। এই দু’জনকে সাথে নিয়েই ভল্ট থেকে ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ লুটের অভিযোগ ওঠে মহির বিরুদ্ধে। এই স্বর্ণ মূলত সমবায় ব্যাংকে বন্দক রেখেছিলো নারায়ণগঞ্জ কোঅপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি নামের একটি সমবায় সমিতির সদস্যরা।
ভল্ট থেকে স্বর্ণ চুরির ঘটনা ধামাচাপা দিতে তখন সব চেষ্টাই করে যুবলীগ নেতা মহি। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অভ্যন্তরিণ তদন্ত করতে দেননি, উল্টো মন্ত্রণালয়ের তদন্তও আদালত মামলা করে স্থগিত করান। এজন্য ব্যাংকের ভেতরে প্রকাশ্যেই দিতেন হুমকি ধামকি। যদিও সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বললেন, ঘটনাটা আগের সুতরাং এর দায় তার নয়।