• ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৭ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সরকারি অনুদান মেলেনি, স্বেচ্ছায় বাঁধ নির্মাণ করছেন গ্রামবাসী

bijoy71news
প্রকাশিত মার্চ ৫, ২০২৪
সরকারি অনুদান মেলেনি, স্বেচ্ছায় বাঁধ নির্মাণ করছেন গ্রামবাসী

সরকারি অনুদান মেলেনি। তাই কৃষকদের স্বার্থে ৮১ গ্রামের মানুষ মিলে ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন।

স্বেচ্ছাশ্রমে মধ্যনগর ও তাহিরপুর উপজেলা বিস্তৃত টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালি বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেন গ্রামবাসী।

জানা যায়, টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালিতে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ নিয়ে প্রতিবছরই দ্বিধায় থাকে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে টাঙ্গুয়ার হাওরটি ‘পরিবেশ সংকটাপন্ন’ এলাকা হওয়ায় এখানে বাঁধ দেওয়া বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ২০২২ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে সরকারি টাকায় বাঁধ দেয়। সে সময় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় নজরখালি বাঁধটি ভেঙে বিপুল পরিমাণ ফসল ডুবে যায়। টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালি ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ হলে ৮১ গ্রামের কৃষকের ১০ হাজারের উপর হেক্টর জমিতে লাগানো বোরো ফসল রক্ষা হবে জানান স্থানীয় কৃষকরা। গ্রামবাসীদের উদ্যোগে বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু করলেও সরকারি সহায়তা চান কৃষকরা। কারণ হিসেবে কৃষকরা বলছেন, বর্তমানে ৫—৬ লক্ষ টাকার বাজেট থাকলেও টেকসই বাঁধ করতে সরকারি সহায়তা প্রয়োজন। এসময় প্রতিবছর সরকারি উদ্যোগেই এখানে বাঁধ নির্মাণ করার দাবি জানান কৃষকরা।

এ ব্যাপারে হোসেনপুর গ্রামের কৃষক কুদ্দুস মিয়া বলেন, বুধবার থেকে আমাদের ৮১টি গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় এখানে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। আমরা প্রতিবছরই এখানে বাঁধ দেয়ার দাবি জানাই। এখানে আমাদের একমাত্র বোরো ফসল লাগানো হয়। এটি আমাদের জীবিকার উৎস। এবারও সরকার থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড এখানে বাঁধ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এখানে ১০ হাজারেরও বেশি হেক্টর জমি রয়েছে। সেই জমির ফসলগুলো যদি তলিয়ে যায়, তাহলে আমাদের পথে বসতে হবে। সেজন্য সবাই মিলে নিজেদের অর্থায়নে ও স্বেচ্ছাশ্রমে এখানে বাঁধের কাজ শুরু করেছি।

রংচি গ্রামের কৃষক আব্দুল হাই বলেন, এখানে সরকারি সহায়তা প্রয়োজন, কারণ আমাদের নিজেদের শ্রম দিয়েও এখানে আরও ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। অনেক মাটি আনতে হবে, অনেক কাজ করতে হবে। সরকারি বরাদ্দ পাওয়া গেলে ভালো হবে।

তবে বাঁধ দেয়াটা হাওরের পরিবেশগত সমস্যা জানিয়ে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, সুনামগঞ্জ জেলায় ভারী বর্ষণ শুরু হলে যাদুকাটাসহ বিভিন্ন নদীর পানির চাপ পড়ে নজরখালিসহ আরও কয়েকটি পয়েন্টে। ঢলের প্রবল ে¯্রাত নজরখালি দিয়ে বিশাল টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রবেশ করলে আশপাশের হাওরগুলো অনেক ঝুঁকিমুক্ত থাকে। আর ঢলে বাধা পেলে গুরমা, মাটিয়াইনসহ অন্যান্য হাওর রক্ষা বাঁধ বিপন্ন হয়ে উঠে। এতে বেশি ফসলহানির আশঙ্কা থাকে। সেজন্য এখানে বাঁধ দেওয়াটা জরুরি বললেও আমরা এখানে বাঁধ দিতে পারি না। একবার ইউএনও সাহেবের অনুরোধে সেখানে বাঁধ দেওয়া হয়েছিলো। সেসময় প্রচুর ফসলের ক্ষতি হয়েছিলো। এখানে পাউবো কখনো বাঁধ দেয়নি।