ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
দেশের রাজনীতি ঠিক হলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ সোমবার রাতে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের রাজনীতি ঠিক হলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। যেটুকু ঘাটতি আছে, রাজনীতিবিদদের চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে গেলে পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘পুলিশের কনস্টেবলের চাকরির জন্য কারা টাকা নিতেন তাও জানি। এখনো কিছু কিছু নেয়। কনস্টেবল যারা চাকরি করতে আসে তাদের কাছ থেকেও কমিশন খায়। এদের আমি ঘৃণা করি।’
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পুলিশ কোনো ব্যক্তির খবরদারির কাছে মাথা নত করবে না। এটা পুলিশের কাজ না। অনেকেই পছন্দের পুলিশ কর্মকর্তা চায়। যদিও এখন কিছুটা কমেছে। এগুলো কমলে পুলিশের দুর্নীতিও কমে যাবে।
বিএনপির সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগস্ট মাস এলে গা ছমছম করে। এই মাসে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। এই মাসেই নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, অনেকে বলেন বিএনপির সঙ্গে বসে মধুর আলাপ করতে। বিএনপির সামনে বসে মুখোমুখি আলাপ করব? ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে ফোনে কী ব্যবহার করেছিলেন খালেদা জিয়া?
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সচেতনতার কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাস্তায় আগেও শৃঙ্খলা ছিল না, এখনো নেই। এ দেশের মানুষের মন, মানসিকতা পরিবর্তন না হলে রাস্তায় শৃঙ্খলা আসবে না। এর জন্য সচেতনতা দরকার।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় সাংবাদিকদের মারধরের বিষয়ে কাদের বলেন, এই যে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে, এরা দুর্বৃত্ত। এদের কোনো দল নেই। এরা কোনো দলের লোক না। পুলিশকে বলা হয়েছে, এদের খুঁজে বের করতে। অপরাধীকে অপরাধের শাস্তি পেতেই হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, অনেক আন্দোলন হয়েছে। এবারের আন্দোলনকে উসকে দেওয়ার যে ষড়যন্ত্র হয়েছে, তা পূর্ব পরিকল্পিত। এ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ভিডিওগুলো আগে থেকে তৈরি করা ছিল। কবে কোথায় থেকে ভিডিওগুলো করা হয়েছিল, সব স্বীকারোক্তি থেকে জানা গেছে। সব তথ্য তারা স্বীকার করেছেন।
পুলিশের ক্যাম্পে আক্রমণের অভিযোগ করে আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, এই আন্দোলনে তারা পুলিশের দুটি ক্যাম্পে আক্রমণ করেছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল পুলিশকে উসকে দেওয়া। পুলিশকে উসকে দিয়ে স্কুল-কলেজের ইউনিফর্ম পরা একটি লাশ ফেলার জন্য পুলিশ লাইনে আক্রমণ করা
হয়েছিল। ঘৃণ্য লোকেরা এসব করেছিল।
সাংবাদিকদের সমালোচনা করে পুলিশ কমিশনার বলেন, কিছু কিছু গণমাধ্যম অসত্য সংবাদও প্রচার করেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ সীমিত আকারে আইন প্রয়োগ করেছে। জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের সাংবিধানিক দায়িত্ব।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাফর ইকবাল, পুলিশের মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।