বিজয় ৭১ ডেস্ক
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রার্থিতা ফিরে পেতে করা রিটে বিভক্ত আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার এক আদেশে জ্যেষ্ঠ বিচারপতির রেফাত আহমেদ খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নির্দেশ দেওয়ার কথা বললেও কনিষ্ঠ বিচারপতি ইকবাল কবির খালেদা জিয়ার আবেদনগুলো খারিজ করে দিয়েছেন।
এর ফলে প্রতীক নিয়ে প্রার্থীরা নির্বাচনের মাঠে প্রচারে নামলেও ঝুলে গেছে খালেদা জিয়ার ভাগ্য। এই বিভক্ত আদেশের বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের কাছে পাঠানো হয়েছে। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এখন নিয়ম অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি একটি বেঞ্চ গঠন করে দিবেন। এই বেঞ্চেই বিভক্তি আদেশের বিষয়ে নিষ্পত্তি হবে।
তবে এই বিভক্ত আদেশ নিয়ে কথা বলেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল।
মাহবুবে আলম বলেন, ‘সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে আছে যে দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি নির্বাচিত হতে পারবেন না। তাই কোনো আদালত এমন কোনো আদেশ দিতে পারে না যে আদেশের বলে সংবিধানের একটি বিধান অকার্যকর হয়ে যায়। ’
এই আদেশ নিয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘তার মনোনয়নপত্র রিটার্নিং কর্মকর্তারা বাতিল করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নির্বাচন কমিশনে যাই। সেখানে সুবিচার পাইনি। সোমবার সারা দিন এটার ওপর শুনানি হয়েছে। আমরা বলেছিলাম দেশের স্বার্থে, জাতির স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আদালত আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী বলেছেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করছে, ঠুঁটো জগন্নাথের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এমনকি ইসির যা করার এখতিয়ার নেই, তা করে যাচ্ছে।’
কায়সার কামাল বলেন, ‘সব বক্তব্য শুনে আদালতের প্রিজাইডিং জাজ আমাদের পক্ষে অর্থাৎ খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন, এ অর্ডার দিয়েছেন। কিন্তু কনিষ্ঠ বিচারপতি ভিন্নমত দিয়েছেন। এতে তা বিভক্ত রায়ে পরিণত হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রিজাইডিং জাজ আদেশ দিয়েছেন নির্বাচন করার পক্ষে। অর্থাৎ খালেদা জিয়া যাতে নির্বাচন করতে পারেন এবং নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন। নির্দেশনা দিয়েছেন, তার যাবতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি ও আনুষ্ঠানিকতা গ্রহণের জন্য।’
খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন, ‘এখন এ আদেশ প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হবে। এ আবেদনটি নিষ্পত্তির জন্য তিনি নতুন একটি বেঞ্চ গঠন করবেন। সেই বেঞ্চে অর্থাৎ থার্ড বেঞ্চে শুনানির জন্য ধার্য করা হবে। আমরা মনে করি ন্যায়বিচার সবসময় থাকবে। কাজেই ন্যায়বিচার পাব। এখন তৃতীয় বেঞ্চে আবার শুনানি হবে। আশা করি, এ বেঞ্চে আমাদের পক্ষে রায় আসবে।’
তবে এজন্য পর্যাপ্ত সময় আছে কি না জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন, ‘সময় নিশ্চয়ই আছে। সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ যে কোনো সময় যে অর্ডার দেয়, সেই অর্ডার মেনে চলতে নির্বাচন কমিশন বাধ্য।’