• ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৫ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেট যুবলীগের প্রতি কেন্দ্রের কড়া আল্টিমেটাম, শীঘ্রই সম্মেলন

bijoy71news
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৮

বিশেষ প্রতিবেদন :: ২০১৪ সালে তিন মাসের জন্য গঠন করা হয় সিলেট মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কমিটি। কিন্তু এ কমিটি চার বছরেও হয়নি পূর্ণাঙ্গ। মহানগরের আহ্বায়ক আলম খান মুক্তি, যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিক জায়গীরদার, সেলিম আহমদ সেলিমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটি ব্যর্থ হয়েছে মহানগরীর ২৭টি ওয়ার্ড কমিটি গঠনেও। দীর্ঘ চার বছরে মাত্র ২০টি ওয়ার্ডের কমিটি করেতে পেরেছেন তারা।

এ অবস্থায় সিলেট মহানগর যুবলীগের কমিটিকে শেষ সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংসদ। আগামী ২৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সুবিধাজনক দিনে সম্মেলন আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদেরকে।

গত সোমবার যুবলীগের ট্রাইব্যুনাল কমিটির সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও ট্রাইব্যুনাল কমিটির প্রধান হারুনুর রশীদসহ ট্রাইব্যুনাল কমিটির নেতারা এ নির্দেশ দেন।

সূত্র জানায়, যুবলীগের ট্রাইবুন্যাল কমিটির সভায় গত সোমবার সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের নেতাদের ডাকা হয়। সেখানে ছিলেন সিলেট মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আলম খান মুক্তি, যুগ্ম আহবায়ক মুশফিক জায়গীরদার, সেলিম আহমদ সেলিম, সাইফুর রহমান খোকন ও আসাদুজ্জামান আসাদ।

ট্রাইব্যুনাল কমিটি তাদেরকে শেষ সুযোগ হিসেবে ২৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্মেলন আয়োজনের নির্দেশ দেন। তবে ২৮ সেপ্টেম্বর বাদে। এছাড়া আগামী ১৫ থেকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাকি ওয়ার্ডগুলোর কমিটি গঠন করে কাউন্সিলরদের তালিকা কেন্দ্রে প্রেরণ ও স্থানীয় নেতাদের সাথে আলোচনা করে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

অপরদিকে, ২০০৩ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে জগদীশ চন্দ্র দাসকে সভাপতি ও আজাদুর রহমান আজাদকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠন করা হয়েছিল তিন বছর মেয়াদি সিলেট জেলা যুবলীগের কমিটি। ২০০৮ সালের সিটি নির্বাচনের সময় তৎকালীন সভাপতি জগদীশ ও সম্পাদক আজাদ দুজনই দলীয় পদ ছেড়ে প্রার্থী হয়েছিলেন। পরবর্তীসময়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান শামীম আহমদ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান খন্দকার মহসিন কামরান। সেই থেকে ১০ বছর ধরে আজ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্তদের দিয়েই চলছে সিলেট জেলা যুবলীগ। এই সময়ের মধ্যে বেশ কয়েকবার সম্মেলন আয়োজনের বিষয় আলোচনায় ওঠলেও সেটি করতে পারেননি ভারপ্রাপ্ত নেতারা। আর একাধিকবার কেন্দ্র থেকে আহবায়ক কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও সিলেটের স্থানীয় নেতাদের মতবিরোধের কারণে আলোর মুখ দেখেনি জেলা যুবলীগের কমিটি।

এবারো যুবলীগের ট্রাইব্যুনাল কমিটির সভায় জেলা যুবলীগকে সম্মেলন আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হলেও সেটি করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। গত সোমবার সভায় যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও ট্রাইব্যুনাল কমিটির প্রধান হারুনুর রশীদসহ ট্রাইব্যুনাল কমিটির নেতারা সম্মেলনের নির্দেশ দিলে তারা সম্মেলন করতে পারবেন না বলে জানান।

সভা সূত্রে জানা গেছে, যুবলীগের ট্রাইব্যুনাল কমিটির সভায় সোমবার সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের নেতাদের ডাকা হয়। সেখানে দুই ইউনিটকে সম্মেলনের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু, মহানগর সম্মেলন করতে রাজি হলেও জেলা শাখা সম্মেলন করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ফলে ট্রাইব্যুনাল কমিটির নেতারা জেলা শাখার ব্যপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য দলের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করেন।

সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও যুবলীগের সিলেট বিভাগীয় ট্রাইব্যুনাল কমিটির আহবায়ক অ্যাডভোকেট বেলাল হোসেন বলেন, সোমবার যুবলীগের ট্রাইব্যুন্যাল কমিটির সভায় সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের নেতাদের ডাকা হয়। সেখানে জেলা যুবলীগকে সম্মেলনের করার জন্য বলা হলেও তারা সেটিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তাই সিলেট জেলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বিষয়টি পার্টির চেয়ারম্যানের কাছে পাঠিয়েছি। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটিই চূড়ান্ত।

তিনি বলেন, সেখানে মহানগর শাখার নেতাদেরকে আগামী ২৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্মেলন আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন থাকায় এদিন বাদে সম্মেলন আয়োজন করতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, যুবলীগের ট্রাইব্যুনাল কমিটির সভার সকল সিদ্ধান্ত দলের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি অনুমোদন দিলেই এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গৃহিত হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৭ জুলাই আলম খান মুক্তিকে আহ্বায়ক এবং চারজনকে যুগ্ম আহবায়ক করে ৬১ সদস্যের মহানগর যুবলীগের কমিটি অনুমোদন দেয় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি। এর মেয়াদ বেঁধে দেয়া হয়েছিল ৯০ দিন। এ সময়ের মধ্যে সকল ওয়ার্ডের সম্মেলন করে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘ ৪ বছর পরও সেই আহ্বায়ক কমিটিতেই মহানগর যুবলীগের পরিধি আটকে আছে। অপরদিকে ১০ বছর থেকে ভারপ্রপ্তদের উপর নির্ভর করেই চলছে জেলা যুবলীগের কার্যক্রম।