ইতিহাস খুব কাছ থেকে হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশকে। মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবলে টানা দ্বিতীয়বার শিরোপার পথে লাল-সবুজের মেয়েরা। গেল বছর ডিসেম্বরে ঘরের মাঠে টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। এবার সেই শিরোপা ধরে রেখে নতুন ইতিহাস লেখার পালা মারিয়া-আঁখিদের।
সাফের বয়স ভিত্তিক আসরে ইতিহাসের নতুন পালক যোগ করতে বাংলাদেশের সামনে বাধা ভারত। যাদেরকে গেল আসরে ফাইনাল সহ দুইবার হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। ভুটানের চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় মুখোমুখি হবে দুই দল।
সাফ অঞ্চলে সামগ্রিক ফুটবলের কথা চিন্তা করলে ভারত এগিয়ে ঠের। তবে মেয়েদের বয়স ভিত্তিক ফুটবল আসরে বাংলাদেশ বেশ ক’বছর ধরে নিজেদের আধিপত্ত প্রতিষ্ঠা করেছে এ অঞ্চলে। ২০১৬ সালে তাজিকিস্তানে ভারতকেই দুইবার হারিয়ে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক ফুটবলের শিরোপা জয় করে বাংলাদেশ। এরপর সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবলে গেল ডিসম্বরে ভারতের মেয়েদের দুইবার হারায় বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে সর্বশেষ ভারত জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে।
অতিত এই রেকর্ড আর বর্তমান পারফরম্যান্স এবারও বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখছে ভারতের চেয়ে। যদিও আসরে সবচেয়ে সেরা দুই দল বাংলাদেশ ও ভারত। তবে বাংলাদেশ সেখানে আবার কিছুটা হলেও এগিয়ে। একারণেই গ্রুপ ও সেমি ফাইনাল মিলে তিন ম্যাচে ২২ গোল বাংলাদেশের। বিপরীতে একটি গোলও হজম করেনি গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা।
অন্যদিকে ভারত গোল করেছে ১৫টি, খেয়েছে ১টি। বাংলাদেশ খেলেছে পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটানের বিপক্ষে। অন্যদিকে ভারত খেলেছে শ্রীলঙ্কা, ভুটান ও নেপালের বিপক্ষে। বাংলাদেশ শুধুই এই আসর নয়, গত আসেরেও কোনো গোল খায়নি। অথাৎ দুই আসর মিলিয়েই বাংলাদেশের জালে এখনো কোনো দল বল পাঠাতে পারেনি প্রতিপক্ষ কোনো দল।
অথচ তহুরা-আঁখিরা প্রতি ম্যাচে গোল উৎসব করছে। ৪ গোল করে এই টুর্নামেন্টে এখন সর্বোচ্চ গোলদাতা তহুরা। ভারতের সিল্কি দেবীও অব্যশ্য সমান গোল করে আছেন তহুরার পাশে। এদিন ফাইনালে দুই জন একে অন্যের থেকে নিজেদের এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
ভারতীয় কোচ ডি সুজা বাংলাদেশকে ফেভারিট বলে দিয়েছেন অকপটে। জানিয়েছেন প্রস্তুতির ঘাটতির কথা। তবে ম্যাচে বাংলাদেশকে যে চেপে ধরার চেস্টা করবে তার শিষ্যরা সে কথাও বলে দিয়েছেন তিনি।
আর বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বরাবরের মতোই শিরোপার কথাই বলে দিলেন, ‘আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলেছি। শেষ ৭ মাসে আমরা যে প্রস্তুতি নিয়েছি, গ্রুপ ও সেমি ফাইনাল মিলিয়ে শেষ তিন ম্যাচে সেই খেলাটা খেলেই ফাইনালে এসেছি। শিরোপা জিততে এই ম্যাচে আমরা আমাদের সেরাটা দেব। যখন আমরা আসরে খেলতে এসেছি, তখন থেকেই এটি আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’
মেয়েরা সেই লক্ষ্য পূরণ করবে বলে আশায় বুধ বেঁধে আছে গোটা দেশের মানুষ।