• ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ঢেলে সাজানো হচ্ছে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ

bijoy71news
প্রকাশিত আগস্ট ১৫, ২০১৮

ডেস্ক রিপোর্ট ::

অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দল সমর্থিত মেয়রপ্রার্থীর পরাজয়ের পর নড়েচড়ে বসেছে আওয়ামী লীগ। পরাজয়ের নেপথ্যে সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই বড় করে দেখছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটের আসনগুলোয় দলীয় প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে সিলেটের সাংগঠনিক কাঠামো ঢেলে সাজাতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দ্রুতই ঢেলে সাজানো হবে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ। দলের দায়িত্বশীল নেতারা তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দলীয় মেয়রপ্রার্র্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের পরাজয়ে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনের দুদিন পর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন কামরান। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রী কামরানকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ ঢেলে সাজানো হবে। কামরান বর্তমানে একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির পদে রয়েছেন।প্রধানমন্ত্রী জানান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কামরানকে কেন্দ্রেই রাখা হবে, মহানগরের দায়িত্ব দেওয়া হবে নতুন কাউকে। ওই দিন সন্ধ্যায় গণভবনে উপস্থিত আওয়ামী লীগের দুজন কেন্দ্রীয় নেতা আমাদের সময়কে বলেন, প্রধানমন্ত্রী সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি মোটামুটি সাজিয়ে ফেলেছেন। শোকের মাস, এ কারণে আগস্টে কমিটি ঘোষণা করা হবে না। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা আমাদের সময়কে জানান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দীন আহমদ। সাধারণ সম্পাদক পদে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। এ পদে একাধিক নাম রয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুডবুকে। বর্তমান কমিটির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেলÑ এ দুজনের মধ্য থেকে যে কোনো একজন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে পারেন।এ বিষয়ে সিলেট বিভাগে বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ আমাদের সময়কে বলেন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজানো হবে। বর্তমান সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান যেহেতু কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন, তাই মহানগরে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।সিলেট আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, সিটি নির্বাচনে পরাজিত মেয়রপ্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের অনুসারীরা মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের গোপন সমর্থনের কারণেই বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। কারণ হিসেবে আওয়ামী লীগের ওই নেতারা বলছেন, সিলেটের রাজনীতিতে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আরিফুল হকের ঘনিষ্ঠরা ‘ওপেন সিক্রেট’। এমনকি ভোটের দিনও ভোট দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, কামরান ও আরিফুল দুজনই ভালো প্রার্থী।দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং সরকারের অর্থমন্ত্রী মুহিতের মুখে এমন কথায় ভোটের মাঠে প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন সিলেটের নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া ওই একই বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী একজন সংখ্যালঘু নারী কাউন্সিলরকে ‘গুণ্ডি’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, ওই গুণ্ডিটা যেন জিততে না পারে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন সিলেটের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। ক্ষমতাসীন দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার মুখে এমন কথায় হতাশ হিন্দু সম্প্রদায় ও মণিপুরি স¤প্রদায়ের মানুষরা।অপরদিকে সিটি নির্বাচনের এ ‘ভ‚মিকায়’ সংসদ নির্বাচনে সিলেট থেকে অর্থমন্ত্রী অথবা তার পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলে দলের অনেকেই তার বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারেন বলেও আভাস পাওয়া গেছে। তথ্য সূত্র : আমাদের সময়।