• ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

রাজনীতিকদের খুব ভালো, জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ হওয়া উচিত : মাশরাফি

bijoy71news
প্রকাশিত ডিসেম্বর ১৫, ২০১৮

বি৭১নি ডেস্ক :
নেতৃত্ব আর দেশপ্রেমের অনন্য নজির স্থাপর করে বহুদিন আগেই সাড়ে বাইশ গজ পিচের সীমানা অতিক্রম করেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। অন্য ক্রিকেটারদের সঙ্গে নিজের স্বাতন্ত্র্যকে সামনে এনে হৃদয় কেড়েছেন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ক্রিকেট-ভক্তদের। সম্প্রতি রাজনীতিতে যোগ দেওয়া বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই ক্রিকেটার কথা বলেছেন ফরাসি বার্তা সংস্থা এএপপির সঙ্গে। চলমান সামাজিক অবক্ষয় ঠেকাতে তরুণদের রাজনীতিতে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
নিজের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে একদিনের ক্রিকেটে জাতীয় দলের এই অধিনায়ক জানিয়েছেন, ক্রীড়া জগতের মানুষ হওয়ায় দেশের খেলাধুলার উন্নতির মধ্য দিয়েই রাজনীতিতে অবদান রাখতে চান। আপাতত নিজ অঞ্চলের মানুষের জন্য কাজ করার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর নড়াইলে জন্ম মাশরাফির। দুর্দান্ত গতিতে বোলিং করার সক্ষমতার কারণে তাকে ডাকা হয় নড়াইল এক্সপ্রেস নামে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেওয়া মাশরাফিকে ১৪ দল থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে নড়াইল-২ আসনে।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রিকেট যেখানে অত্যন্ত জনপ্রিয় সেই দক্ষিণ এশিয়ায় ক্রিকেট থেকে রাজনীতিতে আসার ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে মাশরাফির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমটা হলো, তিনি এখনও খেলছেন জাতীয় দলের হয়ে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভক্তসমর্থকদের একাংশ এখনও তার রাজনীতিতে প্রবেশে খুশি নয়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনেকেই এ নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। কেউ বলেছেন, যে দেশে রাজনীতি ‘নষ্ট’দের দখলে সেখানে কেন তিনি জড়ালেন। কেউ কেউ তার আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার বিরোধিতা করেছে। তবে মাশরাফি এএফপিকে বলেছেন, তিনি কোনোদিন অধঃপতিত হবেন না।
এএফপিকে মাশরাফি বলেছেন, ‘রাজনীতিকদের খুব ভালো ও জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ হওয়া উচিত। বলছি না, আমি ইতিমধ্যেই সেই কাতারে পৌঁছে গেছি।’ সমাজের ক্রমাগত অধঃপতিত হওয়ার বাস্তবতায় তরুণদের রাজনীতিতে আগ্রহী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘আমাদের সামাজিক অবক্ষয়কে খুব কাছ থেকে দেখছে তরুণ প্রজন্ম। আমার মনে হয়, তাদেরও রাজনীতিতে আসা উচিত।’
ভিন্নমতের প্রতি নিজের শ্রদ্ধাবোধের প্রসঙ্গে মাশরাফি এএফপিকে বলেছেন, ‘আমার অবস্থান থেকে আমি স্পষ্ট করে বলতে পারি, ভিন্ন দল কিংবা ভিন্ন বিশ্বাসের, ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের মানুষের প্রতি আমার কোনো অশ্রদ্ধা নেই। আমার দলের প্রতি আমার নিরঙ্কুশ সমর্থন সত্ত্বেও বিরোধীদের প্রতি আমার শতভাগ শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। বলছি এই কারণে যে, যার যার নিজের পছন্দমতো যে কাউকে সমর্থন করার অধিকার রয়েছে। বিরোধীদের আমি কেবল শ্রদ্ধাই জানাতে পারি আর সেটাই আমি করে থাকি’।
ক্রিকেটার থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইমরান খানের সঙ্গে তার তুলনার প্রসঙ্গ এলে মাশরাফি বলেছেন, ‘সত্যি করে বলতে গেলে, ইমরান খান নিজেকে যে উচ্চতায় নিতে সমর্থ হয়েছেন, চাইলেই সবার পক্ষে তা সম্ভব না। সত্যিই কিছু করতে পারি কি না, তা দেখতে আমি আসলে আমার নিজ অঞ্চলের জন্যই কাজ করতে চাই।’
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের ক্রিকেট থেকে এরইমধ্যে অবসর নিয়েছেন মাশরাফি। ২০০৯ সালের পর আর কোনো টেস্ট ম্যাচ খেলেননি। তবে একদিনের ম্যাচে এখনও তিনিই বাংলাদেশের নেতা। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বিশ্বকাপেও নেতৃত্ব দেবেন তিনি।
এএফপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আরেক তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের মতোই ভক্তদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন মাশরাফি। এএফপি তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, সাড়ে বাইশ গজ পিচে মাশরাফির জীবন দিয়ে লড়াই করার মতো দেশপ্রেমই ভোটারদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।