• ১১ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৭শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১১ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

‘প্রশাসন শিক্ষামন্ত্রীকে বিজয়ী করতে কাজ করছে’

bijoy71news
প্রকাশিত ডিসেম্বর ১০, ২০১৮

বি৭১নি ডেস্ক :জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসন থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত বিএনপি দলীয় প্রার্থী ফয়সল আহমদ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেছেন, স্থানীয় প্রশাসন শিক্ষামন্ত্রীকে বিজয়ী করার বিশেষ এজেন্ডা নিয়ে কাজ করে চলেছে। আমার বিশ্বাস ছিল নির্বাচন কমিশন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করবে এবং স্থানীয় প্রশাসন নিরপেক্ষ থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু বাস্তবে যা ঘটছে তা আমার বিশ্বাসের ঠিক বিপরীত।
সোমবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেটের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, প্রথা অনুযায়ী প্রতীক গ্রহনের সময় প্রার্থীর সাথে তার প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার সামনে হাজির থাকবেন। আর এই উদ্দেশ্যে আজ সোমবার সকালে সিলেট আসার পথে আমার প্রার্থীতার সমর্থনকারী গোলাপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ চৌধুরীকে হেতিমগঞ্জের হিলালপুর এলাকায় ডিবি পুলিশ গাড়ী থামিয়ে ফিল্মী কায়দায় গাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করে। অন্যদিকে আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থী পুলিশ প্রটোকল নিয়ে তার নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। স্থানীয় প্রশাসনের এরূপ দ্বৈত নীতি আসন্ন নির্বাচনকে যেমন প্রশ্নবিদ্ধ করছে তেমনি প্রত্যাশিত লেভেল প্লেইং ফিল্ডকে হাস্যরসে পরিণত করছে।
সিলেট-৬ আসনের ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত বিএনপি দলীয় প্রার্থী এসময় বলেন, আজ প্রচার কাজের প্রথম দিনে আজ সন্ধ্যায়, ফুলবাড়ী ইউনিয়নে ধানের শীষের সমর্থনে উঠোন বৈঠকে বসার কথা ছিল, যার আয়োজক ছিলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। আমার এই বৈঠক বানচাল করার হীন উদ্দেশ্যে দুপুরে ফুলবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান ফয়সলকে স্থানীয় থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। স্থানীয় প্রশাসনের এমন ন্যক্কার জনক আচরণে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, পুলিশ প্রশাসন আওয়ামী সরকারের আমলে যে আচরণ করে আসছিল, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও তাদের আচরণে কোন পরিবর্তন হয়নি তারা আজও আওয়ামী লীগের অধীনে। অথচ নিয়ম এবং আইন অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই পুলিশ প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের আওতায় আসার কথা।
বিরোধী মত ও দল দমানোতে সরকার বরাবর পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে আসছে উল্লেখ করে ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন গতরাতে আছিরগঞ্জ বাজারে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাদেপাশা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি শাহাবুদ্দিনকে রাউকারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় আজ দুপুরে বুধবারী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন শুধু গ্রেপ্তারই করছেনা, তারা রাতবিরাতে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বাসা বাড়ীতে হানা দিয়ে তল্লাশির নামে হয়রানি করছে এবং অনেককেই ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এলাকা ছাড়ার জন্যে শাসিয়ে যাচ্ছে। যা কোন গণতান্ত্রিক দেশে কাম্য হতে পারে না।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসনকে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করার জন্যে আহবান জানিয়ে ধানের শীষ প্রতীকের এই প্রার্থী বলেন, উদ্ভূত যে কোন পরিস্থিতির জন্যে স্থানীয় প্রশাসনকে দায়ী থাকতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে গতরাতে এবং আজকে গ্রেপ্তারকৃত বিএনপি যুবদল নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশ জামাযাতে ইসলামীর বিয়ানীবাজার উপজেলার নায়েবে আমীর হাফিজ মাওলানা মুফাচ্ছির আহমদ, সেক্রেটারি ফরিদ আহমদ, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার আমীর নাছির উদ্দিন চৌধুরী সহ গ্রেপ্তারকৃত সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানান তিনি।
আসন্ন নির্বাচন গণতন্ত্র মুক্তির নির্বাচন, দেশ মাতা বেগম খালেদা জিয়া মুক্তির নির্বাচন, এ নির্বাচনটি আন্দোলনের অংশ’র নির্বাচন উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান তিনি। সেই সাথে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের ভোটারদেরকে গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠায় সকল ভয় ভীতিকে উপেক্ষা করে আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানান তিনি।