• ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

তারেক রহমানের ফেরা নিয়ে যে বার্তা দিলেন মির্জা ফখরুল

bijoy71news
প্রকাশিত জুন ১১, ২০২৫
তারেক রহমানের ফেরা নিয়ে যে বার্তা দিলেন মির্জা ফখরুল

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরছেন – এমন বার্তাই দিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (১০ জুন) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এমন ইঙ্গিত দেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘তারেক রহমান অবশ্যই দেশে ফিরবেন। তিনি খুব শিগগিরই ফিরছেন। ’ তবে তারেক রহমানের ফেরার সুনির্দিষ্ট তারিখ জানাতে পারেননি তিনি।

এদিকে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশরাফ কায়সারের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা-তাহলে কি ৫ আগস্টের আগেই দেশে ফিরছেন তারেক রহমান?

বুধবার (১১ জুন) দেওয়া স্ট্যাটাসে আশরাফ কায়সার লেখেন, ‘তিনি লন্ডন থেকে ফিরছেন ৩৬শে জুলাই-এর আগেই। ’ এর একদিন আগে (১০ জুন) তারেক রহমানের সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করে আশরাফ কায়সার লেখেন, ‘আমার চোখে, গত ১০ মাসে নেতৃত্বের গুণাবলিতে তিনি দশ ধাপ এগিয়েছেন। চেষ্টা করছেন রাজনীতির নতুন ব্যাকরণের সঙ্গে বিএনপিকে মানানসই করতে, সেইসঙ্গে তার সম্ভাব্য রাষ্ট্র পরিচালনা। প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে তার খোলাখুলি আলোচনা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে নতুন পথনির্দেশনা দেবে সেই প্রত্যাশায়। ’

বিএনপির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, তারেক রহমান ৫ আগস্টের আগেই বাংলাদেশে ফিরছেন। তবে সুনির্দিষ্ট দিন ধার্য হয়নি বলে জানায় ওই সূত্রটি।

এর আগে গত ৪ জুন কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) মো. তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ওরফে তারিক চয়ন তার ফেসবুক পেজে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের একটি ভিডিও পোস্ট করেন। এতে দেখা যায় – উপস্থাপিকা সালাহউদ্দিন আহমদকে প্রশ্ন করেন, ‘তারেক রহমান কবে দেশে আসবেন?’ জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এখন বলতে পারি যে উনি খুব শিগগিরই ফিরবেন ইনশাল্লাহ। তবে দিন-তারিখ বলতে পারবো না। ’ উপস্থাপিকা পুনরায় প্রশ্ন করেন, ‘তিন মাসের মধ্যে?’ জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘তারও আগে। ’

২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটি বড় অংশ মনে করেছিলেন, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের ঠিক পরদিনই তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। অনেকে বিশ্বাস করেন, সেদিন যদি তিনি ফিরতেন, তাহলে বিমানবন্দরে লাখো মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত হতো। কিন্তু কেন সেই সময় দেশে ফিরলেন না তিনি, তা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।

দীর্ঘদিন ধরেই লন্ডন থেকে বিএনপির রাজনীতি পরিচালিত হচ্ছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যে রাজনৈতিক বাস্তবতা ছিল, তা এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই ভিন্ন পরিস্থিতিতে বিএনপি কতটা নিজেদের মানিয়ে নিচ্ছে কিংবা নিজেদের অনুকূলে পরিস্থিতি এনে একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে দেশ পরিচালনার ভার তুলে দিতে পারছে-এটি যেমন আলোচনার বিষয়, তেমনি একটি দলের সর্বোচ্চ নেতা দেশে না থেকে দল পরিচালনা করছেন কেন, সেই প্রশ্নও সমানভাবে রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

চলতি বছর ৬ মে লন্ডন থেকে চিকিৎসা শেষে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশে ফেরার সময়ও অনেকে আশা করেছিলেন তারেক রহমানও ফিরবেন। যদিও তার বদলে দীর্ঘ ১৭ বছর পর তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান শাশুড়ির সঙ্গে দেশে ফিরেছিলেন। সেদিনই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ‘জুবাইদা রহমান ফিরেছেন, তারেক রহমানও ফিরবেন। সেদিন খুব বেশি দূরে নয়। কিছুদিন পর জুবাইদা রহমান আবারও লন্ডনে যাবেন এবং খুব দ্রুতই তারেক রহমানসহ দেশে ফিরে আসবেন। ’ ইতোমধ্যেই জুবাইদা রহমান লন্ডনে ফিরে গেছেন।

এতদিন তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দায়ের হওয়া মামলাগুলো ছিল তার দেশে না ফেরার বড় কারণ। তবে সম্প্রতি সব মামলায় খালাস পাওয়ার পর বিষয়টি ভিন্ন দিকে মোড় নেয়।