• ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মাসেতুর কর্মীদের বেতনের ৭৮ শতাংশ কেটে নেয় টেলিটক!

bijoy71news
প্রকাশিত অক্টোবর ৬, ২০২৪
পদ্মাসেতুর কর্মীদের বেতনের ৭৮ শতাংশ কেটে নেয় টেলিটক!

পদ্মা সেতু পরিচালনা ও টোল আদায়ে কর্মী নিয়োগ দিয়ে তাদের বেতনের ৭৮ শতাংশই টেলিটেল কমিউনিকেশনস লিমিটেড কেটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুতে টোল কালেক্টরসহ বিভিন্ন পদে ১৩০ জন কর্মী নিয়োগ দিয়েছে টেলিটেল কমিউনিকেশনস লিমিটেড।বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ একজন টোল কালেক্টরকে প্রতি মাসে বেতন দেয় ৬৪ হাজার টাকা। কিন্তু টোল কালেক্টররা চাকরির শুরুতে টেলিটেল থেকে বেতন পান মাত্র ১৪ হাজার টাকা।

হিসাব করে দেখা যায়, জনপ্রতি টোল কালেক্টরের বেতন থেকে ৫০ হাজার বা ৭৮ শতাংশ টাকা কেটে নিচ্ছে টেলিটেল। ১৩০ জন কর্মীর বেতন থেকে প্রতি মাসে ২২ লাখ টাকা এবং বছরে দুই কোটি ৬৪ লাখ লাখ লুটে নিচ্ছে তারা।

অভিযোগ রয়েছে, বেতন শিটে সেতু কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত বেতন উল্লেখ আছে থাকলেও বেতনের কলাম গোপন রেখে স্বাক্ষর নেওয়া হয় কর্মীদের।

এছাড়া কম বেতনে কর্মী নিয়োগ করতে গিয়ে নির্ধারিত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার বিষয়টিও অনুসরণ করেনি টেলিটেল। আবার অল্পশিক্ষিত অনেকে কাজ করছেন বড় পদে। এতে টোলের টাকা আদায়ে নানামুখী সমস্যা হচ্ছে।

এবিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তদন্ত করে বিষয়টি দেখা হবে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস বলেন, কর্মীদের বেতন কম দেওয়ার বিষয়ে কিছু অভিযোগ এসেছে। এ জন্য টেলিটেলকে বেতন স্টেটমেন্ট পাঠাতে বলেছি। এর আগেও তাদের কাছে বেতন স্টেটমেন্ট চাওয়া হয়েছিল। এরপর তারা কিছু তথ্য দিয়েছিল, কিন্তু সেটা অসম্পূর্ণ ছিল।

সূত্র জানিয়েছে, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে ২০২২ সালের ১১ জুন প্রায় ৫০ জন টোল কালেক্টর যোগদান করলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র আটজন। দুই বছরে টোল ম্যানেজার পরিবর্তন হয়েছে অন্তত সাতজন। অনেক অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ স্টাফও পরিবর্তন হয়েছে।

জানা গেছে, কম বেতনে সংসার চালাতে না পেরে অনেকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। আবার বেশি বেতনের অনেক কর্মীকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করেছে কর্তৃপক্ষ। কারণ নতুন কর্মী নিয়োগ করলে কম বেতন দেওয়া যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পদ্মা বহুমুখী সেতুর টোল কালেক্টর ফজলুল হক বলেন, সব টোল কালেক্টর মিলে বেতন বৃদ্ধির জন্য একটি আবেদন করেছি। এখনো এর কোনো অগ্রগতি জানি না। তবে এটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকারিভাবে আমাদের বেতন অনেক বেশি। কিন্তু সে অনুযায়ী আমরা বেতন পাই না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে এত কম বেতনে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।