সংবাদদাতা :: ৪ জুন নির্বাচন। শেষ মুহুর্তের প্রচারণায় বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীদের চোখে নেই ঘুম। ৪ নং শেওলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন, ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী বিএনপির আখতার হোসেন খান জাহেদ, আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিকের প্রার্থী মো: জহুর উদ্দিন, স্বতন্ত্র রাজন আহমদ খান(শাকিল), জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের খেজুর গাছ প্রতিকের প্রার্থী মাওলানা আব্দুল হামীদ খান, সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের মশাল প্রতিকের প্রার্থী আব্দুল হাই। ৯ টি ভোট কেন্দ্র নিয়ে গঠিত শেওলা ইউনিয়ন। এ গুলো হচ্ছে,শেওলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,দিগলবাক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,বালিঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,চারাবই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শালেম্বর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘড়–য়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,কাকরদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,তেরাদল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণভাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৯ টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। সরেজমিন শেওলা ইউনিয়ন ঘুরে জানা যায়, ইউনিয়নের ভেতর শেষ মুহুর্তে ধানের শীষ ও নৌকা প্রতিকের মধ্যে লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া অপর তিন প্রার্থীরা ও বসে নেই। সবাই জয়ের জন্য অস্থির। নৌকা প্রতিকের প্রার্থী মো: জহুর উদ্দিনের ব্যাপারে এলাকা সুত্রে জানা যায়, আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে অভান্তরীন কোন্দলের কারণে তাকে একটু বেশিই প্রচার প্রচারণা চালাতে হচ্ছে। এলাকায় তার গ্রামে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি প্রচারনার জন্য ইউনিয়নের ভেতর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অপরদিকে তিন বারের জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে পদক লাভকারী বর্তমান চেয়ারম্যান ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী বিএনপির আখতার হোসেন খান জাহেদ ভাল অবস্থানে থাকলেও পারিবারিক অপপ্রচারের কারণে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন। আখতার হোসেন খান জাহেদের ছোট ভাই যুক্তরাজ্যে লন্ডন আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক আফছার খান সাদেকের বিরুদ্ধে ভাইয়ের পক্ষে প্রচারণা চালানোর তথ্য বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রচার করা হয়। এ ব্যাপারে আফছার খান সাদেক বলেন, অপপ্রচার চালিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে কেউ তাকে সরাতে পারবে না -‘একটি মহল তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করতে চাইছে। এরা বঙ্গবন্ধুর খুনী খন্দকার মোস্তাকের দোসর। মূলত তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাণ্বিত হয়ে দেশ-বিদেশে থাকা ওই চক্রের সদস্যরা এমনটি করছে বলে মনে করেন তিনি। ’তিনি বলেন,-‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে তিনি নির্বাচন করতে চান। যা মহল বিশেষের সহ্য হচ্ছেনা। বিয়ানীবাজারে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ঘাপটি মেরে বসে থাকা সেই মোস্তাক চক্রের সদস্যরা আঞ্চলিকতার দোহাই দিয়ে রাজনীতিকে কুক্ষিগত করে রাখতে চায়। তার রাজনৈতিক কৌশলের কাছে তারা পরাজিত হয়ে এখন অপপ্রচারের জগন্য খেলায় মেতেছে। আফছার খান সাদেক মায়ের অসুস্থতার সংবাদ পেয়ে দেশে এসেছেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আওয়ামীলীগের দলীয় নৌকা প্রতিকের প্রার্থী মো: জহুর উদ্দিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তার সাথে একই ইউনিয়নে ধানের শীষ প্রতিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আফছার খান সাদেকের আপন বড় ভাই আখতার হোসেন খান জাহেদ। ভাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর পক্ষে আফছার খান সাদেক নিজে প্রচার প্রচারণায় অংশ গ্রহন করে আসলেও একটি চক্র ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য তাকে দলীয়ভাকে ঘায়েলের চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। ৪ নং শেওলা ইউনিয়নের ঢেউনগর গ্রামের ভোটার কয়েছ আহমদ পেশায় অটোরিক্সা চালক। তিনি বলেন,ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থীদের মধ্যে দু-জনের পক্ষে বিপক্ষে ভোটাররা কানাঘুষা করছেন। তবে নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর চেয়ে ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থীকে দলীয় প্রতিক দেখে লোক ভোট দেবেনা। ভোটাররা ব্যক্তি দেখে আখতার হোসেন খান জাহেদকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। চারাবই গ্রামের দিনমজুর আকমল হোসেন বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে আখতার হোসেন খান জাহেদ যোগ্য ব্যক্তি। দীঘলবাক গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভোটার জানান, সরকার দলীয় নৌকা প্রতিকের প্রার্থী মো: জহুর উদ্দিন নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে সরকার থেকে অনুদান আনতে সহজ হবে। অপর এক ভোটার জানান, ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী বিএনপির আখতার হোসেন খান জাহেদকে দল মত নির্বিশেষে তাকে এলাকার মানুষ সমর্থন করে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আখতার হোসেন খান জাহেদ পাচঁ বছর ধরে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে ইউনিয়নের ভেতর কোনো বড় ধরনের দুঃঘটনা ঘটেনি। ৫ বছরে মাত্র দুটি মামলা মোকদ্দমা এলাকা থেকে হয়েছে। যা নজিরবিহীন। দীঘলবাক গ্রামের ভেতর ভাল অবস্থানে রয়েছেন নৌকা প্রতিকের প্রার্থী মো: জহুর উদ্দিন। অপরদিকে চারাবই গ্রামে আখতার হোসেন খান জাহেদ তৈরি করেছেন শক্ত ভোট ব্যাংক। অপরদিকে ইউনিয়নের ভেতর হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি অংশ নৌকা প্রতিকের প্রার্থীকে ভোট দেবেন বলে মন্তব্য করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভোটার। অপরদিকে দক্ষতা ও সততার কারণে আখতার হোসেন খান জাহেদকেও হিন্দু সম্প্রদায়ের অপর অংশের ভোটাররা সমর্থন করেন। ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী বিএনপির আখতার হোসেন খান জাহেদ বলেন, আমি হয়তো দলীয়ভাবে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। কিন্তু ইউনিয়নের উন্নয়ন ও গরীব দুঃখী মানুষের সেবা করে আসার কারণে এবারেও তারা আমাকে নিরাশ করবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।