ছয় মাসের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচন দিতে নির্দেশ দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মামলাটির রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি আদালত ৬ মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন দিতে নির্দেশ দেন।
ওই নির্দেশের পর মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন, ‘হাইকোর্ট আগামী ছয় মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশনা কার্যকর করতে বলেছেন।’ একইসঙ্গে আদালত ডাকসু নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে ২০১২ সালের ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনের পদক্ষেপ নিতে ৩১ শিক্ষার্থীর পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর ও ট্রেজারারকে লিগ্যাল নোটিশ দেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই নোটিশের কোনও জবাব না দেওয়ায় ওই একই বছর ২৫ শিক্ষার্থীর পক্ষে রিট আবেদন করা হয়। রিটে বিবাদী করা হয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরকে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছিল, ১৯৯৮ সালের ২৭ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ডাকসু নির্বাচনের পর এর সময়সীমা হবে এক বছর। পরবর্তী তিন মাস নির্বাচন না হলে বিদ্যমান কমিটি কাজ চালিয়ে যেতে পারবে। এ সিদ্ধান্তের পর ডাকসু ভেঙে দেওয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) বিধান অনুযায়ী, প্রতিবছর নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না। প্রায় ২২ বছর আগে ১৯৯০ সালের ৬ জুলাই ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচনের কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। তাদের এই ব্যর্থতার কারণে হাজার হাজার শিক্ষার্থী তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এরপর ৮ এপ্রিল হাইকোর্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন করার ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। পরে সে রুলের ওপর শুনানি নিয়ে ডাকসু নির্বাচন দিতে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
তবে হাইকোর্টের সে আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় ঢাবি উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরকে আইনি নোটিশ পাঠান রিটকারী আইনজীবী। এরপর তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে হাইকোর্টে একটি মামলা করা হয়। মামলাটি বর্তমানে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে।