• ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ইয়াহিয়ার সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন বঙ্গবন্ধু

bijoy71news
প্রকাশিত মার্চ ১৬, ২০২১

বি৭১নি ডেস্ক ::
উনিশশ’ একাত্তরের ১৫ মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকায় আসেন। একদিন পর ১৬ মার্চ সকালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন।
গাড়িতে কালো পতাকা উড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ভবনে যান বঙ্গবন্ধু। তাদের মধ্যে আড়াই ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। ওই সময় বঙ্গবন্ধু তার দাবির প্রতি অনড় থাকেন এবং পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের প্রতি নিপীড়নের তীব্র প্রতিবাদ জানান।
শহিদ জননী জাহানারা ইমাম তার ‘একাত্তরের দিনগুলি’ গ্রন্থে সেই ঘটনা উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘হুড়মুড়িয়ে উঠে নিচে ছুটলাম। খবর খানিকটা হয়ে গেছে। শেখ মুজিবের গাড়িটা প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে বেরিয়ে আসছে। সাদা ধবধবে গাড়িতে পতপত করে উড়ছে কালো পতাকা। দেখে প্রাণটা যেন জুড়িয়ে গেল।
প্রতিবাদের কালো পতাকা উঁচিয়ে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় গিয়েছেন শেখ মুজিব। এর আগে কোনোদিনও পাকিস্তান সরকার বাঙালির প্রতিবাদের কালো পতাকা স্বীকার করে নেয়নি। এবার সেটাও সম্ভব হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে বের হয়ে এলে সেখানে অপেক্ষমাণ দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক এবং অন্যান্য সমস্যা সম্পর্কে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আরও আলোচনা হবে। কাল সকালে আমরা আবার বসছি। এর চেয়ে বেশি কিছু বলার নেই।’
প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে নিজ বাসভবনে ফিরে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠক চলে।
এদিন ভারত সরকার তার ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে সব বিদেশি বিমানের পূর্ব পাকিস্তানে যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিদেশি বিমানে পূর্ব পাকিস্তানে সৈন্য পরিবহন বন্ধ করার জন্যই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ভারতের রাজনৈতিক নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণ নয়াদিল্লিতে বলেন, জনসাধারণের গণতান্ত্রিক অধিকারে বিশ্বাসী বিশ্বের প্রতিটি মানুষ ও সরকারের উচিত শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেওয়া। তিনি এক বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ নেতৃত্বের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
ময়মনসিংহে এক জনসভায় ন্যাপ প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ অলংকৃত করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আহ্বান জানান। জামালপুরে হাজার হাজার মুক্তকামী জনতা লাঠি ও নানান রকম দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিছিল করে।
নিউজউইকের পর্যালোচনা প্রতিবেদন প্রকাশ হয় এদিন। এতে বলা হয়, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু কার্যত স্বাধীনতার ঘোষণাই করলেন। জনৈক এক পাশ্চাত্য কূটনীতিবিদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদক লোরেন জেনকিনসে লিখেন, পূর্ব এবং পশ্চিমাঞ্চল বিচ্ছিন্ন হইয়া যাইবে ইহা কোনো প্রশ্ন নয়, বরং পরিস্থিতি হঠাৎ এতদূর গড়াইয়াছে যে, পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চল কি পরবর্তী সপ্তাহে কিংবা আগামী মাসে অথবা দুই বৎসর পর বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়িবে।