বি৭১নি ডেস্ক :জঙ্গিবিরোধী সিনেমা ‘মিস্টার বাংলাদেশ’-এর পরিচালক ও অভিনেতা খিজির হায়াত খানকে হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাজধানীর বনানী থেকে সোমবার তাদের গ্রেফতার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। মঙ্গলবার আদালত ওই দুই জঙ্গিকে তিনদিনের রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দিয়েছেন।
গ্রেফতার দুই জঙ্গি হল- এবিটির সামরিক শাখার সদস্য এমদাদুল ইসলাম ওরফে মেহেদী হাসান (৩০) ও আবু বকর (২০)। মেহেদী হাসানের সাংগঠনিক নাম সবুজ ওরফে আবু সালমান ওরফে হুজাইফা। আবু বকরের সাংগঠনিক নাম ফাহিম আবদুল্লাহ। এর মধ্যে জঙ্গি এমদাদ হত্যার মিশন বাস্তবায়ন করতে গত আগস্টে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে আসে।
দুই জঙ্গিকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে বনানী থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক কামরুজ্জামান। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মো. নোমান দুই জঙ্গির তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সিসিটিসি’র উপ-কমিশনার (ডিসি) সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, জঙ্গিবিরোধী চলচ্চিত্র নির্মাণ করায় খিজির হায়াত খানকে টার্গেট করে এবিটি। তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে মাঠে নেমেছিল এবিটির সদস্যরা। এ বিষয়ে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আরও তথ্য বেরিয়ে আসবে।
চলচ্চিত্র পরিচালক খিজির হায়াত খান বলেন, জঙ্গিবিরোধী চলচ্চিত্র ‘মিস্টার বাংলাদেশ’ মুক্তির তিনদিন আগে সৌদি আরব থেকে একটি ফেসবুক আইডির মাধ্যমে আমাকে হুমকি দেয়া হয়েছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে দুই মাস আগে আমাকে জানানো হয়, আমাকে জঙ্গিরা টার্গেট করেছে। এ কারণে সাবধানে চলাফেরা করার কথাও বলা হয়।
সিটিটিসি জানায়, এবিটি’র শীর্ষ নেতা মাওলানা ওসমান গণির নির্দেশে জঙ্গি আবু বকর খিজির হায়াতের বিষয়ে মাঠপর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ করছিল। ওসমান গণির গ্রামের বাড়ি নরসিংদীতে। তার নির্দেশনায় গোপন অ্যাপসের মাধ্যমে খিজির হায়াতকে হত্যার বিষয়ে আলোচনা হয়। খিজির হায়াতকে অনুসরণের দায়িত্ব পাওয়ার পর আবু বকর সহযোগী মাহফুজকে নিয়ে কুমিল্লায় খিজির হায়াতের গ্রামের বাড়ি রেকিও করে। খিজির হায়াতের বাবার সঙ্গেও কথা বলে সে। এসব তথ্য সৌদি আরবে অবস্থানরত এমদাদুলকে সরবরাহ করে আবু বক্কর।
হত্যার মিশন বাস্তবায়ন করতে গত আগস্টে এমদাদুল দেশে ফিরে আসে। আবু বক্কর ও এমদাদের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে। সিটিটিসির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এমদাদ কেরানীগঞ্জের মারকাহুদা আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছে। ২০১৬ সালে সে কাতার হয়ে সৌদি আরবে যায়। মাদ্রাসায় পড়া অবস্থাতেই সে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে। আবু বকর যাত্রাবাড়ীর একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল।