• ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ধবল ধোলাইয়ে সাকিবের মূলমন্ত্র পরিশ্রম

bijoy71news
প্রকাশিত নভেম্বর ২৯, ২০১৮
বি৭১নি ডেস্ক :২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম টেস্টে চোট পেয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তাঁর বদলে নেতৃত্বভার পেয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করেছিলেন সাকিব। ৯ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও ধবলধোলাইয়ের সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। অধিনায়কও সেই সাকিব

সেই দুই টেস্টের সিরিজ, অধিনায়কও সেই সাকিব আর প্রতিপক্ষও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ তো ধবলধোলাইয়ের ইঙ্গিত!

মিরপুর টেস্ট শুরু কাল থেকে। সাকিব আজ সংবাদ সম্মেলনে এলেন চনমনে মেজাজেই। নিজের ফিটনেস নিয়ে অধিনায়ক আরও আত্মবিশ্বাসী। চট্টগ্রাম টেস্ট তিন দিনে শেষ হওয়ায় বিশ্রাম নেওয়ার জন্য অতিরিক্ত দুই দিন পাওয়া গেছে। সাকিব জানালেন, তিনি সহ দলের সবাই এই বাড়তি সময়টুকু ফিটনেসের উন্নতিতে বিনিয়োগ করেছেন। অর্থাৎ মিরপুরে আরও চাঙা মেজাজে দেখা যাবে বাংলাদেশ দলকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করতে তা জরুরি। সংবাদ সম্মেলনে ‘ধবলধোলাই’ মানে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের প্রসঙ্গ তুলে সাকিবকে ৯ বছর আগে ফিরিয়ে নিয়েছিলেন সংবাদকর্মীরাও।

ঠিকই ধরেছেন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ দলের সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর। অনেকের মতেই, সেটি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা বিদেশ সফর। সিরিজের শুরুতেই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোর্ডের সঙ্গে প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের তুমুল বিরোধ। ফলে অধিনায়ক ক্রিস গেইলসহ দলের বেশ কয়েকজন তারকা খেলোয়াড় নিজেদের প্রত্যাহার করে নিলেন সিরিজ থেকে। সিরিজটা হবে কি না, তা নিয়েও ছিল সংশয়! শেষ পর্যন্ত ফ্লয়েড রেইফারের নেতৃত্বে ‘দ্বিতীয় সারি’র দল মাঠে নামিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর প্রথম টেস্টে বাংলাদেশও পেল দুঃসংবাদ। হাঁটুর চোট নিয়ে মাঠ ছাড়লেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তাতে অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়ে যান সাকিব। বাকিটা ইতিহাস।

সাকিবময় সেই টেস্ট সিরিজে প্রথমবারের মতো কোনো দলকে ধবলধোলাই করার ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও ওই একবারই মিলেছে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ, সেটিও আবার ধবলধোলাই! সংবাদ সম্মেলনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই দলকে ‘দ্বিতীয় সারি’র বলে সাকিবকে প্রসঙ্গটা মনে করিয়ে দিতেই বাংলাদেশ অধিনায়ক মৃদু হেসে খেললেন সামনের পায়ে, ‘আমরাও তখন অত ভালো ছিলাম না।’ তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয়বারের মতো ধবলধোলাই করতে মিরপুর টেস্টকে সুযোগ হিসেবেই দেখছেন সাকিব, ‘সুযোগ আছে। তবে সুযোগটা কাজে লাগাতে আসলে অনেক কঠিন পরিশ্রম করতে হবে।’

সাকিব এই কথার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ থেকে। চট্টগ্রাম টেস্টে তিন দিনে হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাঁদের সামনে এখন সিরিজ হারের শঙ্কা। তাই সফরকারী দলটি যে আগের টেস্টের চেয়ে ভালো করার চেষ্টা করবে সেটাই স্বাভাবিক। আর এ কারণেই সুযোগ কাজে লাগাতে কঠিন পরিশ্রমের কথা বললেন সাকিব, ‘স্বাভাবিকভাবেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ আরও বেশি ভালো করার চেষ্টা করবে। ওরা চেষ্টা করবে সর্বোচ্চটা দিয়ে যেন ভালো করতে পারে। জিততে পারে। তাই আমাদের জিততে হলে ওদের থেকে ভালো পারফর্ম করতে হবে। চট্টগ্রামে আমরা যেভাবে পারফর্ম করেছি তার চেয়েও ভালো করতে হবে। আমাদের নিজেদের ওপরই নিজেদের অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সেগুলো টপকাতে হলে মানসিক ও শারীরিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে।’

ধবলধোলাইয়ের সুযোগ মানে কিন্তু প্রত্যাশার চাপও। দল ১-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে। এই অবস্থায় মিরপুর টেস্ট নিয়ে দলের ড্রেসিংরুমে প্রত্যাশার আলাদা কোনো চাপ আছে কি না? এই প্রশ্নের জবাবে সবাইকে নিশ্চিত করলেন এভাবে, ‘না, আমার মতো মনে হয় না অতিরিক্ত কোনো চাপ আছে। শেষ দুই দিনে ড্রেসিংরুমে যতটুকু থেকে দেখেছি সবাই খুব ফুরফুরে মেজাজে আছে। এবং খুব ভালো পরিস্থিতিতে আছে। ম্যাচের আগে একটা দলের যতটুকু আত্মবিশ্বাসের দরকার হয় ঠিক ততটুকুই আছে। যে কয়দিন টেস্ট চলে সে কয়দিন যেন আমরা তা ধরে রাখতে পারি।’