দাবি আদায় না হওয়ায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করেছে বেক্সিমকোর আন্দোলনরত শ্রমিকরা। এ সময় তারা দুইটি বাসসহ কয়কটি পরিবহনে আগুন দেয়। খবর পেয়ে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল চারটার দিকে শ্রমিকরা নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের চক্রবর্তী এলাকায় রাস্তা অবরোধ শুরু করে। পরে তারা কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেয়। এ সময় গনমাধ্যমকর্মীরা ছবি এবং ভিডিও তুলতে গেলে তাদের উপর হামলা চালায় শ্রমিকরা।
আহতরা হলেন- দীপ্ত টিভির গাজীপুর প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাভিশনের ফটোসাংবাদিক আমির হোসেন রিয়েল ও প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার কালিয়াকৈর প্রতিবেদক আবু সাঈদ।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার শ্রমিকদের এক গণসমাবেশ থেকে আজ বিকেল তিনটার মধ্যে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা না পেয়ে তারা সড়ক অবরোধ শুরু করে। এখন পর্যন্ত সড়ক অবরোধ চলছে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে বিপুল পরিমাণ পুলিশ লক্ষ্য করা গেছে।
আন্দোলনরত শ্রমিক ও শিল্প পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাভার এলাকার ‘বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের’ বন্ধ হওয়া ১৬ কারখানা চালুর দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছেন শ্রমিকরা। কারখানা খোলার দাবিতে তারা কয়েকজন ‘টিম লিডার’-এর নেতৃত্বে এসব কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এর অংশ হিসেবে বুধবার শ্রীপুর সান সিটির মাঠে গণসমাবেশ ডেকেছেন। সমাবেশের একপর্যায়ে চন্দ্র-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন শ্রমিকরা।
বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের জনসংযোগ কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গণপরিবহনে ভাঙচুর ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর শ্রমিকদের হামলার বিষয়টি দুঃখজনক।’
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবু তালেব বলেন, ‘বেক্সিমকোর বন্ধ কারখানাগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুর করেন শ্রমিকরা। তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে পুলিশ।’
ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার প্রণব চৌধুরী বলেন, গাড়িতে আগুন দেয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণ নেয়া হয়েছে। দুইটি বাসসহ কয়েকটি ট্রাকে তারা আগুন দেয়। তবে ট্রাকে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করে ফিরছি, পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
গত ১৫ ডিসেম্বর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেক্সিমকোর শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটির সভার সিদ্ধান্তের পর বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬টি কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
বন্ধের কারণ হিসেবে সরকার জানায়, কারখানাগুলোতে ক্রয়াদেশ না থাকা ও ব্যাংকে ঋণখেলাপি থাকায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না।