ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর জেরে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ ফারাক্কার ১০৯টি গেটের সবগুলো খুলে দেয়ায় নতুন করে বাংলাদেশের উত্তর বঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮।
ফারাক্কা বাঁধের গেটগুলো খুলে দেয়ায় বন্যার ঝুঁকিতে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদসহ বাংলাদেশের কয়েকটি জেলা। বাংলাদেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নিউজ১৮ বলছে, প্রবল বৃষ্টি আর বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে পানি ছাড়ার কারণে চাপ বাড়ছে ফারাক্কা ব্যারেজে। পানি ছাড়তে হচ্ছে এই ব্যারেজেও। ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় দৈনন্দিন পানি ছাড়ার পরিমাণ বাড়ছে। যদিও বাকি সময়ে আপস্ট্রিমে পানি যেমন থাকে, সেই অনুযায়ী ছাড়া হয় ডাউনস্ট্রিমে। গঙ্গার পানির স্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।
ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্প সূত্রের বরাতে স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বিপুল পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় এবং ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানিস্তর বৃদ্ধি হতেই সব গেট খুলে দেয়া হয়েছে। যে পরিমাণ পানি আসছে, সেই পরিমাণ পানি ছাড়া হয়েছে। এরইমধ্যে ফারাক্কা ব্যারাজ এলাকায় পানি বিপৎসীমার ৭৭ দশমিক ৩৪ মিটার ওপর দিয়ে বইতে থাকায় ‘বাধ্য হয়ে’ গেট খুলতে হচ্ছে।
এই পানি ছাড়ার ফলে গঙ্গা থেকে বিভিন্ন গ্রাম ও মাঠে পানি প্রবেশ করছে বলে নিউজ১৮-এর প্রতিবেদনে বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, প্লাবনের আশঙ্কা করছেন মুর্শিদাবাদের মানুষ। বিহার, ঝাড়খণ্ডসহ গঙ্গার উচ্চ অববাহিকায় ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে হু হু করে বাড়ছে গঙ্গার পানির স্তর।
জানা গেছে, ফারাক্কা ব্যারেজের আপস্ট্রিমে পানি ধারণক্ষমতা ২৬ দশমিক ২৪ মিটার। বিপৎসীমা ২২ দশমিক ২৫ মিটার এবং সর্তকতাসীমা ২১ দশমিক ২৫ মিটার। আপস্ট্রিমের ধারণক্ষমতা অতিক্রম করায় শনিবার থেকে খুলে দেয়া হয় অধিকাংশ গেট। ইতোমধ্যেই ১১ লাখ কিউসেকের বেশি পানি ছাড়া হচ্ছে ব্যারেজ থেকে। যদিও পদ্মায় পানি বাড়ায় প্লাবণের পরিমাণ আরও বাড়ছে।
এর আগে ভারতের ডম্বুর ও গজলডোবা বাঁধ খুলে দেয়ায় বাংলাদেশের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও মৌলভীবাজারসহ বেশ কিছু অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে।