• ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

এক সপ্তাহ না যেতেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের অগ্নিকাণ্ড

bijoy71news
প্রকাশিত জুন ১, ২০২৪
এক সপ্তাহ না যেতেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের অগ্নিকাণ্ড

এক সপ্তাহ না যেতেই ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। ৩ ঘণ্টার আগুনে পুড়ে ছাই স্থানীয়দের বসতিসহ দুশোর বেশি রোহিঙ্গা বসতি। আর পুড়ে গেছে দেড় শতাধিক দোকানপাট।

স্থানীয়দের দাবি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিকল্পিতভাবে আগুন দেয়া হয়েছে। তবে কেউ হতাহত না হলেও আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে তদন্ত না করে কিছুই বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

শনিবার (১ জুন) দুপুর ১টা। দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হচ্ছে একের পর এক বসতি। চারদিকে শুধু চিৎকার আর চিৎকার। জীবন বাঁচাতে বসতি থেকে বেরিয়ে আসছে শিশু থেকে শুরু করে শত শত নারী-পুরুষ। সবার অবস্থান ক্ষেত-খামারে। আগুনে বসতি পুড়ে ছাই হলেও নিরবে দেখা ছাড়া আর কোনো উপায় নেয় রোহিঙ্গাদের।

শনিবার ৩ ঘণ্টার আগুনে পুড়ে ছাই উখিয়ার ১৩ নম্বর ক্যাম্পের কাঁঠালতলী বাজার ও রোহিঙ্গাদের ডি-৩ ব্লক। এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই ১৩ নম্বর ক্যাম্পে ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড।

ডি ৩ ব্লকের বসতি হারা রোহিঙ্গা নুর কামাল বলেন, ‘আমি বাজার থেকে ফিরছিলাম। হুট করে দেখি আমার বসতির পাশের বসতি থেকে আগুন জ্বলছে। তা মুহূর্তের মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। আমি আগুন লেগেছে বলে চিৎকার করলে সবাই বসতি থেকে বেরিয়ে যায়। তবে কারা আগুন দিয়েছি সেটি দেখি নাই।’

আরেক রোহিঙ্গা নারী তসলিমা বলেন, ‘বসতি পুড়ে সবকিছু ছাই হয়ে গেছে। শুধুমাত্র বাচ্চা দুটাকে কোনো রকম বের করতে পেরেছি।’

রোহিঙ্গাদের বসতির পাশাপাশি এই ক্যাম্পে ছিল স্থানীয়দেরও বসতি। রোহিঙ্গাদের বসতিতে লাগা আগুনে পুড়ে ছাই স্থানীয় ১০টির বেশি বসতি। একই সঙ্গে পুড়েছে দেড়শোর বেশি স্থানীয়দের দোকানপাট। স্থানীয়দের দাবি, নাশকতার উদ্দেশ্যে রোহিঙ্গারা এই আগুন লাগিয়েছে।

আগুনে বসতি হারা স্থানীয় বাসিন্দা সারা খাতুন বলেন, ‘আমার সবকিছু শেষ। রোহিঙ্গাদের দেয়া আগুনে পুড়ে সবকিছু ছাই। স্বর্ণ, নগদ টাকা, আসবাবপত্র থেকে শুরু করে কিছুই বের করতে পারিনি। প্রতিবন্ধী মেয়েকে কোনো রকম জীবন বাজিয়েছি।’

ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় আরেক বাসিন্দা নবী হোসেন বলেন, ‘আগুনের ঘটনা রোহিঙ্গাদের নাশকতা। তারা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে ক্যাম্পে আগুন দিতে। কিছুদিন আগেও ক্যাম্পে আগুন দিয়েছিল। এখনও তারা আগুন দিয়েছে। এসব রোহিঙ্গাদের কারণে বার বার আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’

আগুনের ঘটনা সাড়ে ১২টার দিকে ঘটলেও দ্রুত ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট। আর ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে কেউ হতাহত না হলেও অগ্নিকাণ্ডের কারণ তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস উখিয়া স্টেশনের ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম।