বিশেষ প্রতিবেদন ::
সিলেটে হাতেগুণা কয়েকজন নেতার নামের সাথে জড়িয়ে আচ্ছে ‘স্বচ্ছ’ রাজনীতিবিদ শব্দটি। এদের মধ্যে অন্যতম অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন। তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি। শৈশব থেকেই নিরব প্রকৃতির এ নেতা ছিলেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। দায়িত্ব পালন করেছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের। বর্তমানে রয়েছেন একই ইউনিটের সহসভাপতির দায়িত্বে। সবসময় আলোচনার বাইরে থাকা এই নেতা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে এসে চমক সৃষ্টি করেন। সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি নিয়োগের সময়ও তিনি ছিলেন আলোচনার বাইরে। কিন্তু সবশেষে তাঁর ক্লিন ইমেজ ও সততাকে গুরুত্ব দিয়ে তাঁকেই পিপি নিযুক্ত করে হাইকমান্ড। কোনো কিছু প্রাপ্তির ব্যাপারে নিজাম উদ্দিনের আলাদা কোনো লোভ নেই। তিনি দল ও দলীয় প্রধানের উপর আস্থাশীল থেকেই নিরব ভূমিকা পালন করেন। সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন ঘিরে প্রার্থীরা যখন বিভিন্ন এলাকা চষে ঘুরছেন নিজাম উদ্দিন নিজেও তখন থেমে নেই। মাঠে কাজ করলেও তিনি তাকিয়ে আছেন দলীয় প্রধানের দিকে। তিনি এক বাক্যে বলেছেন, দলের কর্মী হিসেবে আমি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে মাঠে আছি এমন নয়; রাজনীতি করি হিসেবে সবসময়ই আমি মাঠে থাকি। নির্বাচনে আমি নৌকা পাব কি-না তা শুধু আমার নেত্রীই ভালো বলতে পারবেন। যদি নেত্রী আমার উপর ভরসা রাখেন, তবে সততার সাথেই নেত্রীর অর্পিত দায়িত্ব পালন করব।
সিলেটের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দিক বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দলে বা মনোনয়ন প্রাপ্তির ব্যাপারে আলোচিত ব্যক্তির চেয়ে স্বচ্ছ নেতাদেরই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদেও অতীতে এমন চমক সৃষ্টি হয়েছে।
তৎকালিন নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের নাম সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচিত হচ্ছিল। কিন্তু তিনি চমকের উপর চমক দেখিয়ে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগে সভাপতি কামরান এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন ফের দায়িত্ব পাবেন বলেও আলোচনার শেষ ছিল না। সেখানেও ছিল নতুনত্ব। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিনকে মহানগরের সভাপতি ও আলোচনার বাইরে থাকা অধ্যাপক জাকির হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক করাও ছিল শেখ হাসিনার বড় চমক। এরই ধারাবাহিকতা সিলেট-৩ আসনের চূড়ান্ত প্রার্থীর ব্যাপারেও দলীয় প্রধানের নতুন কোনো বার্তার অপেক্ষায় নেতকর্মীরা। সে হিসেব করলে আলোচনার বাইরে থাকা নিজাম উদ্দিনকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। দলের একাধিন নেতা বলেছেন, প্রার্থীর ব্যাপারে সিদ্ধান্তের পুরো বিষয়টি শেখ হাসিনার কাছ থেকে আসবে। তবে নিরব থাকা নিজাম উদ্দিনকে অবহেলা করা যাবে না। নৌকার মাঝি নির্ধারণের ব্যাপারে নতুন চমক তিনিও হতে পারেন। তবে পুরো ব্যাপারটি নির্ভর করবে দলীয় হাইকমান্ডের উপর।
এদিকে, প্রতিদিন আদালতে নিজের অফিস শেষে বাড়ি না ফিরে মাঠে কাজ করছেন নিজাম উদ্দিন। ইতোমধ্যে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জের প্রতিটি ইউনিয়নে তাঁর পা পড়েছে। অব্যাহত আছে তার গণসংযোগ। সাথে আছেন উপজেলা ও ইউনিয়নের দায়িত্বশীল নেতাকর্মীরা।