• ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

দলকানা মঞ্জুর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা

bijoy71news
প্রকাশিত জুন ৬, ২০২০

জাকিরুল আলম জাকির ::
মারাত্মক নেশায় আসক্ত ছিলেন মঞ্জু ভাই-শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের আগ পর্যন্ত এই নেশা ছাড়তে পারেননি-প্রিয় পাঠক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন “আওয়ামী লীগ” ছিল তার একমাত্র নেশা।
আমার দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় থেকে যাকে দেখে এসেছি একজন পদ-পদবি বিহীন সাচ্চা আওয়ামী লীগার। বিশাল বড় মাপের নেতা ছিলেন না কিন্তু বিশাল বড় বড় নেতাদের উত্থান-পতন আর ছন্দ-পতন দেখেছেন নিজের চোখে, এই সিলেটের আওয়ামী রাজনীতি অঙ্গণের, সাবেক এবং বর্তমান, মন্ত্রী এমপি থেকে শুরু করে দলের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দের কাছে এক নামে পরিচিত ছিলেন মঞ্জু ভাই। নিজেকে নিয়ে কিংবা পরিবার নিয়ে ব্যস্ত থাকেননি বঙ্গবন্ধুর এই সৈনিক, দলের কাজ আর দলের সিনিয়র নেতাদের ফরমায়েশ এটাই যেন শিরোধার্য।
শেখ হাসিনার নিবেদিত এই প্রাণকর্মী থেকেছেন সব সময় “প্রচারবিমুখ”।কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য,মনজু ভাই দলের কর্মসূচির দিন তারিখ সময় পাশাপাশি অতিথি কারা আসছেন এসব বিভিন্ন কর্মসূচির প্রচার আর নেতাদের নাম প্রচার করতে গিয়ে কিভাবে প্রচারবিমুখ মনজু ভাই হয়ে গেলেন “বহুল প্রচারিত” অর্থাৎ “মাইক মঞ্জু” এই নামে খ্যাতি পেয়েছেন সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দের কাছে।গোটা সিলেটের আনাচে-কানাচে অলিতে গলিতে চসে বেড়িয়েছেন,কখনো রিক্সায় কখনো সিএনজি নিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন আর প্রচার করেছেন দলের কর্মসূচি। সহজ সরল নৌকা পাগল এই মানুষটি রিশকা কিংবা সিএনজির সামনে-পিছে মাইক লাগিয়ে আর হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে নেতাদের নাম বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলেছেন। মুখ দিয়ে কতশত নেতার নাম মাইকিং করেছেন সেটা না হয় অজানাই থাক, যত নেতাদের নাম মনজু ভাই মুখ দিয়ে উচ্চারণ করেছিলেন তাদের বেশিরভাগ মঞ্জু ভাইয়ের চোখের সামনেই একচালা টিনের ঘর থেকে হয়েছেন দালানের মালিক,আর অনেকেই তো পদ-পদবী ব্যবহার করে হয়েছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ, দলকানা মন্জুভাই শুধু মাইকিং করেই গেলেন নিজের কিংবা পরিবারের অবস্থার উন্নতি করতে পারলেন না,কিন্তু মঞ্জু ভাইকে আমি প্রথম যেদিন দেখেছিলাম শেষ নিশ্বাস এর আগ পর্যন্ত অবস্থা অপরিবর্তিত ছিল, দলের নামে অন্ধ আর বড় বড় নেতাদের দরজা তার জন্য খোলা থাকা সত্ত্বেও না হয়েছেন দালানের মালিক, না হয়েছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ, উল্টো জীবনের অন্তিম সময় গুলো কাটিয়েছেন চেনাজানা রাজপথ থেকে অনেক দূরে, অসুস্থ অবস্থায় ঘরবন্দি ছিলেন মনজু ভাই, নিজের আদর্শিক দল ক্ষমতায় আর শীর্ষ স্থানে অধিষ্ঠিত রয়েছেন মঞ্জু ভাইয়ের পরিচিত দলের সকল নেতৃবৃন্দ, তবুও মঞ্জু ভাইয়ের ছিল চিকিৎসার অপর্যাপ্ত ব্যবস্থা, ছিল না ওষুধ কেনার টাকা, নিজের এবং পরিবারের ক্রমাগত অভাবের কথা নাইবা বললাম। দলের দুঃসময়ে বলেন সুসময় বলেন মনজু ভাই ছিলেন সবার আগে। দলের প্রয়োজনে যে মানুষটা উপস্থিত থাকত সবসময় সেই মানুষটি আজ না ফেরার দেশে পাড়ি জমানো, আমরা থাকবো দল থাকবে আন্দোলন-সংগ্রাম থাকবে কিন্তু মঞ্জু ভাই অনুপস্থিত থাকবেন,তার অনুপস্থিতি দলীয় নেতৃবৃন্দ খুব বেশি মিস করবেন এটাই আমার বিশ্বাস।অসুস্থ কালীন সময়ে অনেক নেতৃবৃন্দ সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন, যেগুলো সহযোগিতা সাহায্য পেয়েছেন সেগুলোর দশা এমনই “নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা”। মঞ্জু ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা এবং সহমর্মিতা থেকে সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং যারা বিত্তশালী নেতা রয়েছেন,তাদের কাছে আমার উদাত্ত আহ্বান, অলিতে গলিতে আপনাদের নাম নিয়েছেন মাইকিং করে করে, অন্তত সেই ভালোবাসা থেকে আপনারা একটি কাজ করুন, মঞ্জু ভাইয়ের পরিবারের পাশে দাঁড়ান, আপনারা হয়তো সাহায্য করবেন প্রত্যেকের ব্যক্তিগত, কিন্তু এতে করে তার পরিবার উঠে দাঁড়াতে পারবেনা, আপনাদের কাছে আমার উদাত্ত আহ্বান, সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা যদি মানবিক দৃষ্টিগুন থেকে দায়িত্ব নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে মঞ্জু ভাইয়ের পরিবারের জন্য সাহায্যের আবেদন করলে আমার বিশ্বাস বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একনিষ্ঠ প্রিয় মঞ্জু ভাইয়ের জন্য আবেদন প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই গ্রহণ করবেন। আমরাও সকল কর্মীদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে মঞ্জু ভাইয়ের পরিবারের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করছি।

#প্রিয় মঞ্জু ভাইয়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা। দোয়া করি আল্লাহ যেন উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। আমিন।
(লেখক : প্রতিষ্ঠাতা সদস্য : সিলেট মহানগর ছাত্রলীগ, সাবেক সিনিয়র সদস্য : মহানগর যুবলীগ)।